বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা, রাজশাহীতে অনুষ্ঠিতব্য শিক্ষানবিশ পুলিশ সুপারদের (এএসপি) প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়েছে। রোববার সকাল ১০টায় একাডেমিক প্যারেড গ্রাউন্ডে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের এ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ এবং প্যারেড পরিদর্শন করার কথা। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য তিনি সারদা পুলিশ একাডেমিতে শনিবার রাতেই পৌঁছেন। এ ছাড়া পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম এবংর্ যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রোববার সকালের কুচকাওয়াজে অংশ নিতে শনিবার রাতে সারদা পুলিশ একাডেমিতে অবস্থান করছিলেন। তবে শনিবার রাতে জানানো হয়, অনিবার্য কারণবশত শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়েছে।
সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান স্থগিত করার এরকম ঘটনা প্রথমবারের মতো ঘটল। অনুষ্ঠান উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া ছিল। ইতোমধ্যে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তি ও গণমাধ্যমকর্মীদের আমন্ত্রণপত্র বিতরণ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সল হাসান বলেন, কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে কোনো আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয়নি। আমন্ত্রণপত্র বিতরণ করা হয়েছে স্থানীয়ভাবে। তাই কুচকাওয়াজ না হওয়ার বিষয়টি রাতে স্থানীয়ভাবে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই ধরনের তথ্য জানিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, অনিবার্য কারণবশত রোববারের অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে সমাপনী কুচকাওয়াজ উপলক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাওয়া দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। পুলিশ বাহিনীর সংস্কার না হওয়া, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ক্যাডার বানানোর অভিযোগসহ শহীদদের হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো সরকারি দাওয়াতে অংশগ্রহণ করবেন না বলে ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন এই সমন্বয়ক।
জানতে চাইলে সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, 'আমরা জানতে পেরেছি কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই আওয়ামী লীগের দোসরদের এএসপি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের ভাইদের মৃতু্যর মিছিল এখনো চলছেই। এমতাবস্থায় এই দোসরদের নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া মানে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা। তাই আমি অনুষ্ঠানের একজন আমন্ত্রিত অতিথি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসেবে এ অনুষ্ঠান প্রত্যাখ্যান করলাম।'
এ ছাড়াও আওয়ামী শাসনামলে প্রশাসনে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়ম, অবৈধভাবে নিয়োগের সুষ্ঠু তদন্তগ্রহণ করার পাশাপাশি আন্দোলনে প্রশাসনের অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির জোর দাবি জানান তিনি।