কাজিরহাট-আরিচা রুটে স্পিডবোট বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

প্রকাশ | ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

পাবনা প্রতিনিধি
কাজিরহাট-আরিচা নৌরুটে পড়ে থাকা স্পিডবোট -যাযাদি
পাবনা থেকে তথা উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকা, মানিকগঞ্জ রুটসহ আশপাশের সাধারণ মানুষ কম সময়ে কাজিরহাট-আরিচা নৌরুটের যাতায়াতের জন্য স্পিডবোট ব্যবহার করতেন। এই নৌপথে পাবনা ও মানিকগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বোটগুলো নিয়ন্ত্রণ করতেন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর স্পিডবোটের সঙ্গে যুক্ত মালিক, চালক ও কর্মচারীদের খোঁজ নেই। এখন সেগুলো যমুনার চরে বা যমুনা নদীনালায় পড়ে আছে। এদিকে এরই মধ্যে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিউটিএ) বাহনগুলোর রুট পারমিট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রক্রিয়া শেষ হলেই নতুন করে স্পিডবোট চালু হবে। পাবনা থেকে যমুনা সেতু হয়ে রাজধানীতে যেতে সময় লাগে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। আবার যানজট থাকলে তা ১০-১২ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লেগে যায়। অথচ পাবনা থেকে কাজিরহাট ফেরি ঘাট থেকে স্পিডবোটে যমুনা নদী পার হয়ে মানিকগঞ্জের আরিচা দিয়ে ঢাকা যাতায়াতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ৪ থেকে সাড়ে ৪ ঘণ্টা। স্পিডবোটগুলো বন্ধ থাকায় যাত্রীরা দ্রম্নত ঢাকা যাতায়াত করতে পারছেন না। ৫ আগস্টের আগে দুইপাড়ের লোকজনের মালিকানায় ১৮ ও ১২ আসনের দুই ধরনের স্পিডবোট একশ'র মতো চলাচল করত। সরেজমিন ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, স্পিডবোটগুলো বন্ধ থাকায় যাত্রী, ঘাটের দোকানদার, সিএনজি চালক, স্পিডবোডের চালক কর্মচারীরা কষ্টে দিন যাপন করছে। স্পিডবোট চালক বাপ্পী জানান, দুই মাসের বেশি সময় ধরে কাজিরহাট থেকে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ আছে। যার ফলে তারা প্রায় ৫০-৬০ জন চালক বেকার আছেন। কাজ না থাকায় সংসার চালানো বিপদ হয়ে পড়েছে। এ পথে নিয়মিত যাতায়াতকারী যাত্রী সরকারি চাকরিজীবী আশরাফুল আলম বলেন, তিনি ঢাকায় চাকরি করেন। বিভিন্ন সময় জরুরি কাজে পাবনায় বাড়িতে যেতে সে সময় কুইক সার্ভিস বা স্পিডবোট ব্যবহার করতেন কম সময়ে যাতায়াত করার জন্য। গত ৫ আগস্টের পর থেকে সার্ভিস বন্ধ থাকায় অসুবিধায় পড়েছেন। কাজিরহাট স্পিডবোট ঘাটের চায়ের দোকানদার আব্দুল বাতেন বলেন, গত ৫ আগস্টের পরের দিন থেকে এই পথে যাত্রী পারাপার খুবই কমে গেছে। অল্পকিছু যাত্রী আসেন, তারা লঞ্চ দিয়ে পার হন। ফলে ব্যবসা নাই। বেচাবিক্রি কমে গেছে। যখন স্পিডবোট চলত তখন দিনে ৫-৭ হাজার টাকা বিক্রি হতো। আর এখন বিক্রি হচ্ছে দিনে পাঁচশ'-হাজার টাকা। যাতে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে। তারা চান, স্পিডবোটগুলো দ্রম্নত আবার চালু হোক। ঘাটের সিএনজি চালক আকরাম হোসেন বলেন, স্পিডবোট বন্ধ থাকায় যাত্রী খুবই কম। ফলে তাদের টিপ কমে গেছে। সারাদিন ১-২টি টিপ ভাগে পড়ে। এতে কিছুই হয় না। কাজিরহাট ঘাট এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রইচ উদ্দিন বলেন, এই ঘাটে বিগত দিনে দুইপাড়ের কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতা স্পিডবোটগুলো গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত পরিচালনা করতেন। জনরোষের ভয়ে তারা স্পিডবোটগুলো ফেলে আত্মগোপনে আছেন। এখন বিআইডবিস্নউটিএ বাহনগুলোর রুট পারমিট বাতিল করার উদ্যোগ নিয়েছে। বিআইডবিউটিএ নগরবাড়ি-কাজিরহাট কার্যালয়ের পোর্ট অফিসার আব্দুল ওয়াকিল বলেন, দুই মাসের বেশি সময় যাত্রী চলাচলে দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সংশ্লিষ্ট বোট মালিক ও ইজারাদারের রুট পারমিট বাতিলের কথা লোক মারফত জানানো হয়। কিন্তু কেউ সাড়া দেননি। এখন নতুন করে দ্রম্নত রুট পারমিট দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। তখন এসব স্পিডবোট চলাচল করতে পারবে।