সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটার লোকনাথ নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এক দিনে সিজারিয়ান অপারেশন করা দুই প্রসূতির মৃতু্য হয়েছে।
প্রাথমিক তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, চিকিৎসকের অপচিকিৎসার দায়, ক্লিনিক ব্যবসার আড়ালে দালালদের দ্বারা রোগীদের নিজ ক্লিনিকে নিয়ে আসা ও ক্লিনিকের অবস্থাপনায় রোগী দুইজন মারা গেছে। এমন দায় এড়াতে তরিঘরি করে ক্লিনিক মালিক পুলক কুমার পাল সাতক্ষীরার একটি বে-সরকারী চিকিৎসা কেন্দ্র হার্ট ফাউন্ডেশনে রেফার করেন তাদের। আর সেখানেই ঘটে বিপত্তি। হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি হতে না হতেই রাত ১২ টার দিকে তারা উভয়ই মারা যান।
সাতক্ষীরা হার্ট ফাউন্ডেশনের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফ আহম্মেদ বলেন, 'রোগী দুইজনের সিজারিয়ান অপারেশন শেষ করে অবস্থার অবনতী হলে সাতক্ষীরা হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে আসেন। এখানে আনা মাত্রই আমরা সর্বোচ্চ সেবা দিয়েছি। তবে অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসকের ত্রম্নটির কারনে দুইজনের একই সমস্যা হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।'
নিহতরা উভয়ই তালা উপজেলার খশিখালি ইউনিয়নের বাসিন্দা। এনায়েতপুর গ্রামের আব্দুস সালামের স্ত্রী আম্বিয়া বেগম (৩৫) ও গনেশপুর গ্রামের ফয়সালের স্ত্রী তাসলিমা (১৮)। তারা উভয়ই অজ্ঞানের চিকিৎসক মাহমুদুর রহমান লিওনের তত্ত্বাবধায়নে থাকলেও সার্জারী ডাক্তার ছিলেন পৃথক। এদের ভেতর আম্বিয়া বেগম ছিলেন সার্জারী চিকিৎসক শাহরিয়ার ইমন ও তাসলিমা ছিলেন সার্জারী চিকিৎসক বরকত আলীর তত্ত্বাবধায়নে। অজ্ঞানের চিকিৎসক মাহমুদুর রহমান লিওন, সার্জারী চিকিৎসক শাহরিয়ার ইমন ও বরকত আলীদের মুঠোফোনে যোগযোগের চেষ্টা করলে তারা কেউই ফোন ধরেননি।
তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রজিব সরদার বলেন, 'খবর শোনা মাত্রই আমরা একটি তদন্ত টিম গঠন করেছি। আমি ও আরএমও খালিদ হাসান নয়নসহ সঙ্গীয় চিকিৎসকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত পাটকেলঘাটা লোকনাথ নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অপরশেনাল ও প্যাথলজিক্যাল কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি।
পাটকেলঘাটা থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।