কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে হঠাৎ ৫-৭ মিনিটের স্থায়ী প্রচন্ড ঝড়ো বাতাস ও শিলাবৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়েছে উপজেলার জিনারী ইউনিয়নসহ আশপাশের ১২ গ্রাম। এতে ঘরবাড়ি, গাছপালা ও উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে হঠাৎ শিলাবৃষ্টিসহ প্রচন্ড ঝড়ো বাতাসের কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে গেছে বলে স্থানীয়দের ধারণা।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, হোসেনপুর উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে উত্তর দিকের বৃহৎতম অংশ জিনারী ও সিদলা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গত শুক্রবার রাতে প্রচন্ড বেগে হঠাৎ করেই ঝড়ো বাতাস শুরু হয়। সেই সঙ্গে শিলাবৃষ্টিও। ফলে ঝড়ের তান্ডবে উপড়ে গেছে অনেক গাছপালা। বৈদু্যতিক তার ছিঁড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক ঘরবাড়িও। সেই সঙ্গে আমন ফসল ও শাকসবজিসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রাস্তায় গাছ পড়ে বিভিন্ন এলাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে দেখা যায়, ওই ঝড়ে উপজেলার নামা জিনারীর কেরামত আলীর পুরাতন বসতঘর, রান্নাঘর, গোয়ালঘর, পেঁপে আম, জাম, কাঁঠাল, রেইনট্রি গাছ ভেঙেছে। খান পাড়ার আব্দুর রশিদের বসত ঘর, গোয়াল ঘর, রান্না ঘরসহ পরিবারের লোকজন আহত হন। গাবরগাঁও গ্রামের জেসমিন আক্তার পুষ্পর রান্নাঘর, গাছপালা, আওয়াল মিয়ার পুরাতন বসতঘরসহ অনেক পরিবারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও গাবরগাও, নামা জিনারী, হলিমা, ডাকরীয়া, বেলতলা, টেকাপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের লাখ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার নামা জিনারীর বাসিন্দা শামসুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার রাত পৌনে আটটার দিকে হঠাৎ প্রচন্ড বাতাসের সঙ্গে শিলা বৃষ্টি হয়। চোখের পলকেই গাছপালা ও বাড়িঘর ভাঙতে থাকে। জিনারী এলাকায় বিভিন্ন গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দার ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। অনেকের আমন ফসল ও শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে স্থানীয় লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
হোসেনপুর পলস্নী বিদু্যৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মাসুদ রানা জানান, উপজেলার জিনারি ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় রাতে ঝড়ের কারনে বিদু্যতের পোল ভেঙে যায় ও লাইনের উপরে গাছপালা পড়ায় বিদু্যৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম রহিদ জানান, হঠাৎ ঝড়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা বলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপনে সহযোগিতা করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিন্দ্য মন্ডল জানান, 'আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পাঠানোর পাশাপাশি নগদ অর্থ ও ঢেউটিন সহায়তা দেওয়া হবে।'