শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

ইজারা না হওয়ায় অরক্ষিত ধর্মপাশার কালীজানা গ্রম্নপ জলমহাল

ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
ইজারা না হওয়ায় অরক্ষিত ধর্মপাশার কালীজানা গ্রম্নপ জলমহাল

আদালতে মামলা থাকায় সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার কালীজানা গ্রম্নপ জলমহালটি ১৪৩১ বঙ্গাব্দের পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো ইজারা দেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় এই জলমহালটি এখন অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্থানীয় জেলেরা গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে নিষিদ্ধ মশারিজাল, চায়না দুয়ারি বাইড় ও বড় জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করে আসছেন।

জলমহালটি ইজারা না হওয়ায় সরকার প্রায় এক কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অবাধে মাছ শিকার করায় জলমহালটি ইজারা পাওয়ার জন্য আবেদনকারী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।

ধর্মপাশা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালীজানা গ্রম্নপ জলমহালটি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনাধীন। এটির আয়তন ২৮১ একর ৫৯ শতক। ১৪৩১ বঙ্গাব্দ থেকে ১৪৩৩ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত তিন বছরের জন্য জলমহালটি ইজারা দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ১৪৩০ বঙ্গাব্দের ফালগুন মাসের প্রথম দিকে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে এই উপজেলার পাঁচটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড অংশ নেয়। কিন্তু জলমহালটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকায় এটি এখনো ইজারা দিতে পারেনি জেলা প্রশাসন। জলমহালটি ইজারা না হওয়ায় এবং অরক্ষিত থাকায় গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে স্থানীয় জেলেরা নিষিদ্ধ মশারি জাল, চায়না দুয়ারি বাইর ও বড় জাল দিয়ে দিনে-রাতে অবৈধভাবে অবাধে মাছ শিকার করে আসছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলে বলেন, 'শুনেছি কালীজানা জলমহালটি এখনো সরকারিভাবে ইজারা দেওয়া হয়নি। এই জলমহালটিতে মাছ ধরা যাবে না এমন বিষয় নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধও আসেনি। তাই আমরা এখানে মাছ ধরছি। তবে সরকার থেকে কোনো সমিতিকে ইজারা দেওয়া হলে আমরা এখানে মাছ ধরা বন্ধ করে দেব।'

উপজেলার কালীজানা বিল গ্রম্নপ মৎস্যজীবী সমবায় লিমিটেডের সমিতির সম্পাদক  মো. বুলবুল (৩৫) বলেন, 'জলমহালটিতে প্রশাসনের কোনো নজরদারি বা রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় স্থানীয় জেলেরা নিষিদ্ধ মশারি জালসহ বিভিন্ন জাল দিয়ে দিনে-রাতে অবৈধভাবে অবাধে মাছ নিধন করে আসছে। জলমহালটিতে এখন মাছ শিকারের মহোৎসব চলছে। আমাদের সমিতির পক্ষ থেকে এই জলমহালটি ইজারা পাওয়ার জন্য সাত মাস আগে আবেদন করেছিলাম। জলমহালটি ইজারার সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আমাদের বিডির টাকা ব্যাংকে পড়ে থাকার পাশাপাশি সরকার প্রায় এক কোটি রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।'

সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, 'এই জলমহালটি নিয়ে আদালতে মামলা থাকায় এটি এখনো ইজারা দেওয়া যাচ্ছে না। মামলাটি দ্রম্নত নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করছি। পরে এটি ইজারা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে