বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে তিন মাস বর্ষাব্রত পালনের পর আসে আশ্বিনী পূর্ণিমা। মারমা সম্প্র্রদায় এই ধর্মীয় উৎসবকে বলে থাকে 'মাহাওয়াগ্যেয়ে পোয়ে' অর্থাৎ প্রবারণা পূর্ণিমা, আর তনচংগ্যা চাকমা সম্প্রদায় বলে ওয়া পরপ। প্রতিবছর আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা উৎসব পালন করে থাকেন। এই উৎসবকে ঘিরে রাঙামাটির রাজস্থলীতে চলছে নানা প্রস্তুতি। তবে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে সাম্প্র্রতিক যে ঘটনা ঘটেছে সেটির জের ধরে পাহাড়ে এবার প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব পালন হবে সীমিত পরিসরে। ফলে প্রতিবছর আনন্দে মাতোয়ারা থাকলেও এই বছরের প্রবারণা পূর্ণিমাতে নেই কোনো উৎসবের আমেজ।
প্রবারণা পূর্ণিমা ঘিরে রাঙামাটির রাজস্থলী বাঙ্গালহালিয়াতে বিভিন্ন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পলিস্নগুলোতে এবার নেই কোনো উৎসবের আমেজ। পিঠা বানানো ও ফানুস তৈরি করা হয়েছে সীমিত আকারে। বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের মতে, প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি বিশেষ উৎসব, যা আশ্বিনী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। প্রবারণার মূল হলো বর্ষাবাস সমাপনান্তে ভিক্ষুরা তাদের দোষত্রম্নটি অপর ভিক্ষুদের কাছে প্রকাশ করে তার প্রায়শ্চিত্ত বিধানের আহ্বান জানান। এমনকি অজ্ঞাতসারে কোনো অপরাধ হয়ে থাকলে তার জন্যও ক্ষমা প্রার্থনা করা।
রাজস্থলী মৈত্রী বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্মানন্দ মহাথেরো জানিয়েছেন, পাহাড়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা বা 'মাহাওয়াগ্যেয়ে পোয়ে' এবার উদযাপিত করা হবে সীমিত পরিসরে। প্রতিবছরে মতন এই বছরে থাকবে না কোনো উৎসবের আমেজ। পরিবারের পক্ষ থেকে তৈরি করা হবে না পিঠা বানানো। আবার আকাশে চুলামনি উদ্দেশে ফানুস উড়ানো হবে মাত্র গুটি কয়েক।
তাদের নিজ নিজ সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলতে বৌদ্ধ সম্প্র্রদায়ের ছোট থেকে বড় ও নারী পুরুষসহ সবাই কিনছেন বিভিন্ন ধরনের পোশাক।
রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সজীব কান্তি রুদ্র বলেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবকে ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব সুষ্ঠুভাবে সমাপ্তি ঘটবে বলে আশা তার। এবার সব বৌদ্ধ মন্দিরে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় হতে জি আর চাল বিতরণ করা হয়েছে।