নরসিংদীতে এক অভিনব প্রতারণা এবং অপহরণের শিকার হয়েছেন আলী আহমেদ দুলু নামে একজন ব্যবসায়ী। মুক্তিপণের অর্থ অপহরণকারীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে আট লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন ওই ব্যবসায়ীর ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভার হাসান।
ঘটনাটি ঘটেছে নরসিংদীতে। ড্রাইভার হাসানের বাড়ি কুমিলস্নায়। তিনি নরসিংদী শহরের সঙ্গিতা এলাকায় ভাড়া থাকতেন। এ ঘটনায় নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। ব্যবসায়ী আলী আহমেদ দুলু বাদী হয়ে ড্রাইভার হাসানকে প্রধান আসামি করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৭ জনের নামে মামলাটি করা হয়, যার নম্বর ১০, তারিখ ১২/১০/২৪ ইং।
ঘটনার বর্ণনায় জানা গেছে, আলী আহমেদ দুলুর বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার অলিপুরা ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরনগর এলাকায়। পেশায় তিনি একজন পোলট্রি এবং মাছের খাদ্য ব্যবসায়ী। গত ৪ অক্টোবর তিনি ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার নিয়ে ব্যবসায়িক কাজে নরসিংদীর বাসা থেকে সাহেপ্রতাব এলাকায় যাচ্ছিলেন। পথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে নরসিংদীর দগরিয়া এলাকায় পৌঁছলে চারটি মোটর সাইকেলে আটজন তার পথরোধ করে। তারা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত এবং চোখ বেঁধে ফেলে ব্যবসায়ীর। এরপর শারীরিকভাবে নির্যাতন এবং এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কিন্তু এত টাকা নেই জানালে অপহরণকারীরা তার কাছ থেকে একাধিক স্টাম্প কাগজ ও একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বস্ন্যাংক চেকে স্বাক্ষর নেয়। এ ছাড়া তার দামি প্রাইভেটকার এবং গাড়িতে থাকা ব্যাংকের চেকবই, জমির দলিলপত্র ও বিল্ডিং তৈরির নকশাসহ মূল্যবান কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। এরপর আগামী দুই দিনের মধ্যে ক্যাশ আট লাখ টাকা দিলে গাড়িসহ অন্যান্য বস্তু ফিরিয়ে দেওয়া হবে শর্তে তাকে রাত ১১টার দিকে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার চৈতন্য বাসস্ট্যান্ডের পাশে নামিয়ে দেয়।
শর্ত অনুযায়ী, গত ৬ অক্টোবর ড্রাইভারের মাধ্যমে এই ব্যবসায়ীর সঙ্গে মোবাইলে কথোপকথন হয়। সরল বিশ্বাসে ব্যবসায়ী আলী আহমেদ আট লাখ টাকা ড্রাইভার হাসানের হাতে তুলে দেন। ড্রাইভার হাসান টাকাগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় বলেন, 'আপনারা বসেন আমি টাকাগুলো বুঝিয়ে দিয়ে (অজ্ঞাত বা গোপনীয় স্থানে অবস্থান করা অপহরণকারী দলকে) এক ঘণ্টার মধ্যেই গাড়িসহ সবকিছু নিয়ে চলে আসব।' কিন্তু এক ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও ড্রাইভার হাসান ফিরে আসেননি। তিনি টাকা নেওয়ার সময় যে কথা দিয়েছিলেন, সেই কথা রাখেননি।
প্রায় এক সপ্তাহ অপেক্ষার পর গত ১২ অক্টোবর ব্যবসায়ী আলী আহমেদ দুলু বাদী হয়ে নরসিংদী সদর মডেল থানায় ড্রাইভার হাসানকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক মামলাটি রুজু করে এর তদন্তের জন্য সাব-ইন্সপেক্টর আ. গাফফারকে দায়িত্ব দিয়েছেন।