১৪ জেলের জরিমানা বিপুল পরিমাণ জাল ধ্বংস

মা ইলিশ রক্ষায় মৎস্য বিভাগের অভিযান

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
মা ইলিশ রক্ষায় সব ধরনের মাছ ধরার উপর চলছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা। প্রজননক্ষম ইলিশ সংরক্ষণের জন্য ১৩ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা যথাযথ পালনে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মৎস্য বিভাগ। এ সময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় তিন জেলায় ১৪ জেলের জরিমানা ও বিপুল পরিমাণ জাল জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত- লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি জানান, ভোলার লালমোহনে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে ৩টা পর্যন্ত উপজেলার বদরপুর এবং ফরাজগঞ্জ ইউনিয়ন সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এহসানুল হক শিপনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে মা ইলিশ রক্ষায় চলমান নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকারের দায়ে ৮ জেলেকে আটক করা হয়। পরে আটকদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মোট ২৩ হাজার পাঁচশ' টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও অভিযানে জব্দ করা হয় ১১ হাজার মিটার জাল এবং দুইটি মাছ ধরা ট্রলার। পরে জব্দ জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। অভিযানকালে লালমোহন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলী আহমদ আখন্দসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। রামগতি (লক্ষ্ণীপুর) প্রতিনিধি জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা নদীতে ইলিশ মাছ ধরার অপরাধে লক্ষ্ণীপুরের রামগতিতে ৬ জেলেকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ আমজাদ হোসেন পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালতে তাদের জরিমানা করা হয়। বুধবার ভোরে বয়ারচর এলাকার অদূরে মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ সময় আনুমানিক ৪০ লাখ টাকার জাল জব্দ করে। অভিযানে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শৌরভ-উজ-জামান এবং বড়খেরী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিলেন। আটক জেলেরা হচ্ছেন- নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার হাতিয়া এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে মো. আশ্রাফ (২০), উপজেলার বয়ারচর এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে মিরাজ উদ্দিন (১৯), জসিমের ছেলে ফরিদ (২০), চর দরবেশ এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে আজাদ (২১), টাংকি সমাজ এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আবদুর রহিম (২০) এবং রহিজলের জেলে মো. করিম (২৩)। মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন বিষয়ক উপজেলা ট্রাস্কফোর্সের সদস্য সচিব সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শৌরভ-উজ-জামান জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বয়ারচর এলাকায় মেঘনায় মাছ ধরার সময় ৬ জেলেকে আটক করা হয়। এ সময় প্রায় আনুমানিক ৪০ লাখ টাকার ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল, ৬০ হাজার মিটার ৪টি ছান্দি জাল, ৪টি রিং জাল এবং একটি চরঘেরা জাল জব্দ হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রত্যেক জেলেকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। সন্দ্বীপ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, সন্দ্বীপে মৎস্য বিভাগের অভিযানে ১০টি জাল ধ্বংস করা হয়েছে। মৎস্য অভিযান ২০২৪ বাস্তবায়নে সন্দ্বীপে গুপ্তছড়া কুমিরা ঘাট ও সন্দ্বীপ চ্যানেলে হতে মৎস্য বিভাগের অভিযানে ৬টি মশারি জাল ও ২টি চায়না দুয়ারি জাল জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে সেগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। জালের আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা। জানা গেছে, ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সরকার চলতি বছর ১৩ অক্টোবর হতে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশসহ যে কোন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে বুধবার উপজেলার গুপ্তছড়া কুমিরা সন্দ্বীপ চ্যানেলে বিশেষ অভিযান চালান ইউএনও রিগ্যান চাকমা, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আতিকুলস্নাহ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ইসমাইল, কোস্টগার্ড সন্দ্বীপ স্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার সদরুল হক প্রমুখ।