আমরা শাসন করতে আসিনি, আগামী দিনে যারা শাসন করবে তাদের পথ খুলে দিতে এসেছি বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসাইন।
সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বৌদ্ধ ধর্মীয় ত্রয়োদশ সংঘরাজ ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির শততম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি কর্তৃক আয়োজিত অষ্টপরিষ্কারসহ সংঘদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসাইন বলেন, আপনারা আপনাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। যারা জনগণের ম্যান্ডেড পাবে আমরা তাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেব। আমরা শাসন করতে আসিনি, আগামী দিনে যারা শাসন করবে তাদের জন্য পথ খুলে দিতে এসেছি। আপনাদের সহযোগিতা দিতে চাই, আপনারা আমাদের হাতকে শক্তিশালী করুন।
আ ফ ম খালিদ হোসাইন বলেন, ভোটের সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে গেছে। জনগণ যাতে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, তার ব্যবস্থা আমরা করব। আমরা ভোটার লিস্ট হালনাগাদ করে, নির্বাচন কমিশনকে সাজিয়ে একটা সুষ্ঠু সুন্দর অবাধ নির্বাচন দেব।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্র্রদায়িক হামলাকারীদের কোনো ধর্ম নেই, তারা ক্রিমিনাল। সাম্প্র্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য উপাসনালয়ে হামলা চালায়। এদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রত্যেককে সোচ্চার হতে হবে। তারা আমাদের সম্প্রীতিকে লালিত ঐতিহ্যকে যাতে ধ্বংস করতে না পারে।
নির্ভয়ে ধর্মীয় উৎসব পালনের আহ্বান জানিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এদের সংখ্যা কম। আপনারা যদি কোনোক্রমে আশঙ্কাবোধ করেন আমাদের নির্দেশ দেওয়া আছে, ডিসি এসপি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়ে আপনাদের পাশে দাঁড়াবে। আপনারা একা নন, আপনারা এ দেশের নাগরিক। আপনাদের সার্বিক অধিকার আছে। আপনারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেন। আপনারা আপনাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন করবেন।
আ ফ ম খালিদ হোসাইন বলেন, আপনারা শুভ প্রবারণা পূর্ণিমায় ছুটির জন্য বলেছেন। এটা আমি মন্ত্রী হিসেবে পারি না। এটা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা লাগবে। আপনাদের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করলে আপনাদের হয়ে আমি সুপারিশ করব।
ভিসা না পাওয়ার কারণে ভারতের গয়ায় তীর্থযাত্রায় যেতে না পারা প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, রোববার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ভারত, নেপালের হাইকমিশনার দেখা করেছেন। তাদের আমি মন্ত্রণালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। ভিসা দেওয়া না দেওয়া ভারতের পলিসিগত ব্যাপার। তবে ভারতের হাইকমিশনারকে অনুরোধ করব অন্ততপক্ষে যেসব বুদ্ধিস্ট তীর্থযাত্রায় যেতে চান তাদের জন্য যেন স্পেশাল ভিসা ব্যবস্থা করেন।
উপসংঘরাজ শাসনপ্রিয় মহাস্থবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও কেন্দ্রীয় বিএনপির উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া। উদ্বোধন করেন প্রজ্ঞাসারথী প্রজ্ঞানন্দ মহাস্থবির। প্রধান জ্ঞাতি ছিলেন উপসংঘরাজ সদ্ধর্মবারিধি প্রিয়দর্শী মহাস্থবির। প্রধান সদ্ধর্মদেশক ছিলেন বিশ্বনাগরিক ড. ধর্মকীর্তি মহাস্থবির।
প্রফেসর তুষার কান্তি বড়ুয়া ও অধ্যাপিকা ববি বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইউএসটিসির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির চেয়ারম্যান অজিত রঞ্জন বড়ুয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান লায়ন আদর্শ কুমার বড়ুয়া, অনুষ্ঠান উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক সত্যপ্রিয় বড়ুয়া প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ জ্ঞাতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদ্ধর্মজ্যোতিকাধ্বজ বসুমিত্র মহাস্থবির, প্রজ্ঞাজ্যোতি মহাস্থবির, প্রফেসর ড. জ্ঞানরত্ন মহাস্থবির ও ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়। সদ্ধর্মদেশক হিসেবে ছিলেন বিনয়পাল মহাস্থবির, শীলরক্ষিত মহাস্থবির, শাসনপ্রিয় মহাস্থবির, শাসনানন্দ মহাস্থবির, শাসনরক্ষিত মহাস্থবির, শাসনশ্রী মহাস্থবির, এম বোধিমিত্র মহাস্থবির, রতনপ্রিয় মহাস্থবির, বোধিরত্ন মহাস্থবির, তিলোকাবংশ মহাস্থবির, প্রিয়ানন্দ মহাস্থবির, পরমানন্দ মহাস্থবির, এইচ শীলজ্যোতি মহাস্থবির ও রতনানন্দ স্থবির।