মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১
নানা সমস্যায় জর্জরিত নারায়ণপাড়া উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র

রাণীনগরে পানিতে নেমেই রোগীদের নিতে হচ্ছে চিকিৎসা আর ওষুধ

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
  ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
রাণীনগরে পানিতে নেমেই রোগীদের নিতে হচ্ছে চিকিৎসা আর ওষুধ

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের নারায়ণপাড়া উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন থেকেই পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে চিকিৎসাসেবা। সেখানে নেই কোনো বিদু্যৎ সংযোগ। পানি নিষ্কাশনের নালা বন্ধ করে দেওয়ায় বর্ষা মৌসুমজুড়েই লেগে আছে জলাবদ্ধতা। ফলে জমে থাকা পানিতে নেমেই চিকিৎসা আর ওষুধ নিচ্ছেন রোগীরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বারবার উপর মহলে এসব অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার মিলছে না।

জানা গেছে, গ্রামঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত সাধারণ জনগণের চিকিৎসাসেবা সহজলভ্য করতে একডালা ইউনিয়নের নারায়ণপাড়া গ্রামে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। একসময় উপজেলার পূর্বাঞ্চলের জনসাধারণের চিকিৎসার আশ্রয়স্থল ছিল এই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু কেন্দ্রের ভবনের ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ায় ও দেয়ালে ফাটল ধরায় এবং অবকাঠামো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরপরও ভবনটি মেরামত বা সংস্কার না করে সেখানেই চলছে চিকিৎসাসেবা।

উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট আসাদুল ইসলামের ভাষ্য, এখানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬০ থেকে ৮০ জনকে সেবা দিতে হয়। মাথার উপর ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ছে। যে কোনো সময় পুরো ছাদই ধসে পড়তে পারে। কিন্তু ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে। বহুবার চেষ্টা করেও বিদু্যৎ সংযোগ নিতে পারেননি। ফলে প্রচন্ড গরমের মধ্যেই বসে সেবা দিতে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, গত প্রায় ৩-৪ বছর হলো বর্ষা নামলেই পুরো বর্ষাকাল স্বাস্থ কেন্দ্রের চতুর দিকে পানি জমে থাকে। ফলে হাঁটু পানি ভেঙেই রোগীরা এসে চিকিৎসা নিয়ে যান। আবার অনেক সময় পানিতে দাঁড়িয়ে থেকেই ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন রোগীরা। এসব ব্যাপারে উপর মহলকে জানিয়েও কোনো সুরাহা হচ্ছে না।

চিকিৎসা নিতে আসা তহমিনা বেওয়া, এলাহী, সখিন উদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন জানান, এলাকার লোকজনের একমাত্র ভরসা এই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবকাঠামো সংস্কার কিংবা মেরামতে কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই। গ্রামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি পানি নিষ্কাশনের নালা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে গত ৩-৪ বছর ধরে বর্ষা মৌসুম আসলেই জলাবদ্ধতা থাকে। এতে হাঁটু পানি ভেঙে এবং পানিতে নেমে ওষুধ নিতে হচ্ছে। এছাড়া ভবনটি অত্যন্ত ঝঁকিপূর্ণ।

রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের কর্মকর্তা ডা. কেএইচএম ইফতেখারুল আলম বলেন, ভবনটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের আবেদন করা আছে। কিন্তু কবে কাজ শুরু হবে তা বলা যাচ্ছে না। এছাড়া পানি নিষ্কাশনে স্থানীয়ভাবে নালা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন বলেন, 'উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি অনেক জায়গায় এমন জলাবদ্ধতা রয়েছে। নারায়ণপাড়া উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে সরেজমিন গিয়ে দেখে দ্রম্নত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে