মানিকগঞ্জের শিবালয়ের পদ্মা-যমুনা নদীতে মা ইলিশ মাছ ধরা গত রোববার থেকে নিষেধ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্ত এক শ্রেণীর অসাধু মৌসুমি জেলে মা ইলিশ ধরতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। উপজেলার পদ্মা-যমুনা নদীর তীরবর্তী এলাকার মৌসুমি জেলেরা মা ইলিশ ধরার জন্য নৌকা ও মাছ ধরার কারেন্ট জাল কিনে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন। নদীতে মা ইলিশ আসা শুরু হলে তারা নৌকা ও জাল-রশি নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে নেমে পড়বেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী ব্যক্তি, মৎস্য অফিসের একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সহযোগিতায় এ মৌসুমি জেলেরা মা ইলিশ ধরে গোপনে কম দামে বিক্রি করে থাকেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মৎস্য কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নদীতে অভিযান পরিচালনা করতে যাওয়ার আগেই মৌসুমি জেলেরা সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে সরে যান। ফলে বেশির ভাগ জেলেকে আটক করা সম্ভব হয় না। আবার অভিযানে আটক জেলেদের ছাড়িয়ে নিতে কিছু দুর্নীতিবাজ জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তদবিরে ব্যস্ত থাকেন। এ কারণে জাটকা বা মা ইলিশ ধরা রোধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সমস্যায় পড়তে হয়।
স্থানীয় এলাকাসী জানান, অভিযানে আটক জেলেদের আভিযান চলাকালীন সময়ে ছেড়ে না দেওয়া ও আটক মাছ ধরার ট্রলার জব্দ করে ভেঙে ফেললে জাটকা ইলিশ ধরা অধিকাংশেই কমে আসবে।
শিবালয় উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর মা ইলিশ ধরা রোধে ২০টি মোবাইল কোর্ট, ৬৬টি অভিযান পরিচালনা, ৪৮টি মৎস্য আড়ত পরিদর্শন, ১৯৩টি বাজার পরিদর্শন করা হয়। অভিযান পরিচালনা করে ১৪১ কেজি জাটকা ইলিশ মাছ ও প্রায় এক লাখ ২৩ হাজার ৭০৪ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। আটক করা হয় ৪৪ জন জেলেকে। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
এ উপজেলায় প্রায় তিন হাজার ৮০০ জন জেলে রয়েছের। এদের মধ্যে দুই হাজার একশ' জেলেকে ভিজিডি কার্ডের মাধ্যমে অভিযানচলাকালীন সময়ে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানান, অসহায় জেলেদের চাহিদা দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি।
জেলেদের ভিজিডি কার্ডের সংখ্যা কম হওয়ার কারণেও কিছুটা সমস্যা হয়। তবে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা সহযোগিতা করলে জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধে শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ সফলতা আসবে।