সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ গুরুদাসপুর পোস্ট অফিস
প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
একটু বৃষ্টি হলেই নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা পোস্ট র্অফিস চত্বরের চারপাশে পানি জমে। প্রবেশ পথেও দুই ইঞ্চি করে শ্যাওলা জমেছে। সাবধানতা অবলম্বন না করলেই পিছলে পরে যেতে হবে যে কাউকে। দীর্ঘদিন ধরে ভনটির সংস্কার না করায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পোস্ট মাস্টারের আবাসিক ভবনটাও পরিত্যক্ত অবস্থায় জরাজীর্ণভাবে রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিস করছেন। সেখানে সেবা নিতে আসা গ্রাহকরাও জরাজীর্ণ ভবন আর ভাঙাচোরা আসবাবপত্র দেখে তাকিয়ে থাকেন।
সরেজমিন দেখা যায়, ১৯৯০ সালে গুরুদাসপুর পৌরসভার গুরুদাসপুর মহলস্নায় অবস্থিত উপজেলা পোস্ট অফিস। উপজেলা সদরের মেইন সড়ক থেকে ২০০ গজ দূরেই এই অফিস। অফিসে প্রবেশ করতেই সদ্য সংস্কার করা নতুন চকচকে একটি ডাকবাক্স দেখা যায়। প্রবেশপথে দুই ইঞ্চি পিচ্ছিল শ্যাওলা ও জলাবদ্ধতা। অফিসের চারপাশে পানি জমে আছে। ভেতরেও পাওয়া গেল সেই প্রাচীণ যুগের জরাজীর্ণ সব আসবাবপত্র। কাঠের টেবিলগুলো উই পোকা খেয়েছে, চেয়ারগুলো কোনো মতে মেরামত করেই চলছে। তেমন কোনো সেবা গ্রহীতার ভিড়ও নেই। পোস্ট মাস্টার তার একজন অপারেটর ও তিনজন আউটসোর্সিং কর্মচারী নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
স্থানীয় সেবাগ্রহীতা মেহেদী হাসান তানিম জানান, তিনিও এক সময় পোস্ট অফিসে চিঠি পাঠিয়েছেন। এখন তার আর তেমন কোনো চিঠি আসেও না, আবার যায়ও না। হঠাৎ তিনি তার অফিসিয়াল একটি চিঠি পাঠানোর জন্য এসেছিলেন। মূলত এখন হাতের নাগালে এত কুরিয়ার সার্ভিস চালু হয়েছে। তাই পোস্ট অফিসে মানুষ আর তেমন আসতে চায় না। তা ছাড়াও সেই ১৯৯৯০ সাল থেকে দেখে আসছেন এই পোস্ট অফিস। এখানে দুই-চার বছর পরপর ডাক বক্স পরিবর্তন হয়। কিন্তু অফিসের কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি। এই পোস্ট অফিসটি সংস্কার হওয়া খুব প্রয়োজন।
উপজেলা পোস্ট মাস্টার ইসমাইল হোসেন বলেন, পোস্ট অফিসটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে অনেক পূর্বেই আবেদনপত্র দেওয়া আছে। তবে এখনো সংস্কার হয়নি। জরাজীর্ণ ভবনেই অফিস করতে হয় তাদের। তবে পোস্ট অফিসে তেমন কোনো কাজ আগের মতো নেই। ব্যক্তিগত চিঠি আদান-প্রদান নেই বললেই চলে। যা আদান-প্রদান হয় সেগুলো অফিসিয়াল চিঠি। মানুষ পোস্ট অফিসে তেমন আর আসতে চায় না। তার বসবাসের জন্য যে আবাসিক ভবনটা ছিল সেখানেও পানি পরে। জরাজীর্ণ অবস্থায় পরে থাকার কারণে তিনি অন্য একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। এখন পোস্ট অফিসে তেমন কাজ নেই। যেসব কাজ রয়েছে তার জন্য অফিসের তিনিসহ আরও চারজন রয়েছেন। এই পাঁচজনকে দিয়েই হয়ে যায়। কাজের পরিধি বাড়ালে অবশ্যই জনবল প্রয়োজন। কিন্তু এখানে কাজের পরিধি আর বাড়ানো সম্ভব না। অফিসিয়াল চিঠি আর সঞ্চয়পত্র করেই সকাল ৯টা হতে ৫টা পর্যন্ত অফিস চলছে তাদের। তিনিও তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এই পোস্ট অফিসটি সংস্কার করার জন্য।