মাভাবিপ্রবির ২৬তম বর্ষে পদার্পণ

প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি
টাঙ্গাইল শহরের অদূরে মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও কাশ্মীরের পীর শাহ-জামানের স্মৃতি বিজড়িত সন্তোষে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার প্রসারে স্থাপিত হয় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি)। প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পেরিয়ে ২৬তম বর্ষে পদার্পণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এই বিশ্ববিদ্যালয় কোনো গতানুগতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়। এটি প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে রয়েছে অসংখ্য জ্ঞানী-গুণী, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও সাধারণ মানুষের অবদান। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের অবদানও কম নয়। এই বিশ্বাবদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাসকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম ভাগ ১৯৫৭ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় ভাগ তৎকালীন ও বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা। মাওলানা ভাসানীর এই ভিন্নধর্মী শিক্ষা দর্শনের প্রতিফলনস্বরূপ তিনি সন্তোষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। তিনি একাধারে বিদ্যাপীঠ ও কর্মশালারূপী এমন এক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কর্ম ও উৎপাদনমুখী শিক্ষাব্যবস্থা থাকবে। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই মাওলানা ভাসানী ১৯৫৭ সালের ৮ ফেব্রম্নয়ারি অনুষ্ঠিত কাগমারী সম্মেলনে ঘোষণা দেন- সন্তোষে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার। যদিও ১৯৭০ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেন। ১৯৭০ সালে ৮ সেপ্টেম্বর সন্তোষে অনুষ্ঠিত এক সুবিশাল সম্মেলনে মাওলানা ভাসানী 'আমার পরিকল্পনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়' শিরোনামে একটি লিখিত নিবন্ধে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত প্রস্তাব পেশ করেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রকল্প পরিচালক হিসেবে অধ্যাপক ড. দুর্গাদাস ভট্টাচার্য নিয়োগ পান। ২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। ২০০২ সালে ২১ নভেম্বর উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বিশিষ্ট সমুদ্রবিজ্ঞানী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ড. ইউসুফ শরীফ আহমেদ খান। উপাচার্যে নিয়োগের পর ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এ দুটি বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৩ সালের ২৫ অক্টোবর ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের অধীনে দুইটি বিভাগে সর্বমোট ৭৫ জন শিক্ষার্থী এবং পাঁচজন শিক্ষক নিয়ে একাডেমিক যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাতটি অনুষদের অধীনে ২০টির অধিক বিষয়ে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। প্রায় ছয় হাজারের বেশি শিক্ষার্থী নিয়মিত অধ্যয়ন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীবান্ধব ও শিক্ষার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। যেহেতু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তাই দেশের জন্য উপযোগী রিসার্চ, যা দেশীয় সমস্যার সমাধানে কাজে আসবে এসব ক্ষেত্রে কাজ করতে চাই। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলের পরিবেশ উন্নত করা, ক্লাস রুম সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য কাজ করব।'