দখলদারিত্বে মৃতপ্রায় আটঘরিয়ার এককালের খরস্রোতা রত্নাই নদী
পুনর্খননের দাবি
প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি
দখলদারিত্বের কারণে 'গলা টিপে হত্যা' করা হচ্ছে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এককালের খরস্রোতা প্রবহমান রত্নাই নদী। দখলদারিত্বে এখন এই নদী মৃতপ্রায়। ফলে আশপাশের বিল ও নিচু এলাকার জল নিষ্কাশনের অভাবে ফসলহানি ঘটছে এবং সর্বসাধারণের ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এ নদীর পানি। নদীর অধিকাংশ এলাকা এখন প্রভাবশালীরা দখলে নিয়ে একে মৃতপ্রায় অবস্থায় নিয়ে গেছে, যা সচেতন মহল 'হত্যা'র শামিল বলে মনে করছেন। নদীটি পুণখর্ননের দাবি সর্বসাধারণের।
পদ্মা নদী থেকে শাখা নদী হয়ে এই নদী আটঘরিয়া উপজেলা চাঁদভা ইউনিয়নের পারকোদায়ালিয়া থেকে রত্নাই নাম ধারণ করে খামার কোদালিয়া হয়ে আটঘরিয়া পৌরসভার রাধাকান্তপুর দিয়ে আবার চাঁদভা ইউনিয়নের বাওইকোলা হাসাইখালী হয়ে দেবোত্তর ইউনিয়নের গোরুরীতে চিকনা নদীতে সংযোগ ঘটেছে।
দীর্ঘ প্রায় ১০ কিলোমিটার রত্নই নদীর অধিকাংশ স্থানে প্রভাবশালীরা পুকুর তৈরি, মুরগির খামার, চাষাবাদসহ নানা স্থাপনা গড়ে তুলে বেদখল করে রেখেছে। ফলে বিভিন্ন স্থানে নদী সরু হয়ে নালায় পরিণত হয়েছে। এ কারণে মৃত প্রায় এই রত্নাই নদী সর্বসাধারণের কোনো কাজে আসছে না। অন্যদিকে এই নদীর কোনো কোনো স্থানে প্রভাবশালীরা ভূমি বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে কথিত লিজ নিয়ে ব্যক্তিগত সম্পত্তি করে ভোগদখল করায় আশপাশের বিল ও নিচু এলাকায় বর্ষণের পানি এই নদী দিয়ে বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ব্যাপক ফসলহানি ঘটছে। এ ছাড়া নদী দখল করে চলছে ব্যক্তিগতভাবে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা।
প্রবীণ ব্যক্তি নকিবউদ্দীন জানান, খুব বেশি দিনের কথা নয়, মাত্র ৪০-৫০ বছর আগেও এই নদী ছিল উন্মুক্ত, খরস্রোতা। সর্বসাধারণ জলকর হিসেবে মাছ ধরত, পানি ব্যবহার করত, এমনকি নদী দিয়ে অহরহ নৌকাও চলত এখন তা সবই অতীত। মহাসিন আলী নামে অপর প্রবীণ ব্যক্তি জানান, যে নদীতে ছোটবেলায় আমরা সাঁতার কাটতাম, খেলতাম, লাফালাফি করতাম, গোসল করতাম, মাছ ধরতাম সেই নদী এখন ব্যক্তি বিশেষরা দখল করে নিয়েছে। এই দখলকে কেন্দ্র করে মাঝেমধ্যে গোলযোগও দেখা দেয়।
নদী পাড়ের মানুষের দাবি বিএস রেকর্ড অনুযায়ী এই নদী মুক্ত করে দ্রম্নত পুনর্খনন করা অতি জরুরি।