খানাখন্দে ভরা সড়কে বিঘ্ন ঘটছে যান চলাচলে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচলে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। এতে করে সড়কটিতে যেমন কমেছে যানবাহনের সংখ্যা তেমনি ভোগান্তি বেড়েছে এলাকাবাসীর। এমন বেহাল সড়কটির অবস্থান নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায়। ওই উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের তিন বট থেকে শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের বালাপুকুর পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার সড়ক সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে চলাচলের।
এলাকাবাসী জানায়, সড়কটি দিয়ে দূরপালস্নার বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল ছিল আগে। কিন্তু সংস্কারের অভাবে খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচল সীমিত হয়েছে গত তিন বছর ধরে। এতে করে পরিবহণ খরচ যেমন বেড়েছে তেমনি ঝুঁকি নিয়ে চলাচলে প্রায় সময়ে সড়কে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের উত্তর বেরুবন্দ গ্রামের কলেজ শিক্ষক আলী হোসেন বলেন, 'প্রায় তিন বছর আগে খানাখন্দে ভরেছে সড়কটি। এরপর থেকে সংস্কার না হওয়ায় বিপদে পড়েছে তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। যানবাহনের স্বল্পতায় ব্যবসা-বাণিজ্যসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলাচলে সমস্যা হচ্ছে এলাকার শিক্ষার্থীদের।'
একই ইউনিয়নের বাঁশদহ গ্রামের ব্যবসায়ী ফজলুল করিম বলেন, 'সড়কটির কারণে আমরা তিন বছর ধরে সমস্যায় আছি। বিভিন্ন স্থানে গর্তের কারণে যানবাহন চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। এতে করে পাঁচ টাকার ভাড়া ২০ টাকা হয়েছে। এরপরও দুর্ঘটনার ঝুঁকিতো আছেই।'
উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের খেরকাটি বাজারের ব্যবসায়ী জহির উদ্দিন (৬০) বলেন, 'এই পথে নীলফামারী জেলা শহর, ডিমলা, ডোমার, জলঢাকা উপজেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে যাওয়া-আসা করেন এলাকার মানুষজন। সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় পণ্য পরিবহণে খরচ বেশি হচ্ছে। এছাড়া এলাকার কৃষকের উৎপাদিত ফসল হাটবাজার ও শহরে নিতে খরচ বেশি হচ্ছে।'
তিনি জানান, বর্ষায় গোটা সড়ক কাদা পানিতে সয়লাব হয়ে থাকে। আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলায় ভরে যায়। গ্রামের দেওনাই নদীর দ্বিজেন বাবুরঘাট ও বালাপুকুর ব্রিজের নিচ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বড় বড় ট্রাকে এ পথে নেওয়ার কারণে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওই সড়কে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে বেহালদশা। সড়ক ভেঙে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে বৃষ্টির পানিসহ কাদামাটি জমেছে। এক সময়ের ব্যস্ত সড়কটিতে এখন যানবাহন চলাচল একবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে।
জলঢাকা উপজেলা প্রকৌশলী শিশির চন্দ্র দাস জানান, সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় আট কিলোমিটার। উপজেলার খেরকাটি বাজার থেকে বালাপুকুর পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এবং খেরকাটি থেকে তিন বট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার অংশ সংস্কারের প্রস্তাবনা জেলা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সড়কের সংস্কারসহ একটি কালভার্ড ও দুইটি ইউড্রেন করা জরুরি। এ জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৬০ লাখ টাকা। বরাদ্দ পেলে মেরামত কাজ শুরুর প্রক্রিয়া করা হবে।