লোকসানের আশঙ্কা চাষিদের

মেহেরপুরে অতিবৃষ্টিতে ঝরে যাচ্ছে মাল্টা

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

মেহেরপুর প্রতিনিধি
মেহেরপুরের মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় বাণিজ্যিকভিত্তিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাল্টা চাষ। মাল্টা বিক্রির বাজার সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি দাম ভালো পাওয়ায় জেলায় মাল্টা চাষের পরিধি বাড়ছে। তবে এবার অতিবৃষ্টিতে রোগ লেগে গাছ থেকে মাল্টা ঝরে যাচ্ছে। ফলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা আবু তালেব জানান, ২০১৯ সালে তারা কয়েকজন মিলে ১১ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরই মাল্টার ফলন পেয়েছিলেন এবং ৫৬ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেন। পরের বছর ৫ লাখ টাকা, এরপর ১৪ লাখ টাকা এবং গত বছর ২৭ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেন তারা। বিগত বছরগুলো লাভবান হওয়ায় এবার ১৯ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করেন। এ বছর ৫০ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রির আশা তার। বাগানে প্রচুর পরিমাণ মাল্টা ধরেছে। কিন্তু অতিবৃষ্টিতে রোগ লেগে ঝরে যাচ্ছে মাল্টা। শুধু তার বাগানেই ঝরছে না, অনেক বাগানেই ঝরছে মাল্টা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে বৃষ্টি কমে গেছে, এখন রোদ হলেই মাল্টা ঝরা বন্ধ হয়ে যাবে। একই গ্রামের মাল্টা চাষি সুমন জানান, মাল্টার ফলনে কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু অতিবৃষ্টিতে বাগানে পানি জমে থাকায় রোগ লেগে ঝরে যাচ্ছে। বাগানের ৩০% মাল্টা ঝরে গেছে। তার পরেও বর্তমানে ব্যবসায়ীরা ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে জমি থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এই দামটা থাকলে চাষিদের লোকসান হবে না। তবে লাভের পরিমাণ কমে যাবে। মেহেরপুরের মাল্টা বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় ব্যবসায়ীরা চাষির জমি থেকে মালটা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আমঝুপি বস্নকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, বাগানে পানি জমলে সাইট্রাস জাতীয় ছত্রাকে মাল্টা ঝরে যায়। সেক্ষেত্রে ঝরে যাওয়া মাল্টাগুলো দ্রম্নত সরিয়ে নিয়ে ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, জেলায় প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে মাল্টা বাগান আছে। যে বাগানগুলো উঁচু জমিতে সেগুলোর কোনো সমস্যা হচ্ছে না। নিচু জমিতে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন বৃষ্টি কমে গেছে এবং রোদ হচ্ছে। আশা করা যায় মাল্টা ঝরা বন্ধ হয়ে যাবে। চাষিদের লোকসান হবে না।