বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১
টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়ক

অসমতল রাস্তায় গাড়ি চলে লক্কর-ঝক্কর

গর্তেই আটকে যাচ্ছে যানবাহন
মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
কার্পেটিং উঠে খানাখন্দে বেহাল টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়ক -যাযাদি

সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় হাঁটুপানি। বড় বড় গর্তে আটকে যাচ্ছে যানবাহন। আবার খড়ায়ও ঘন কুয়াশার মতো উড়ছে ধুলোবালি। ধুলোবালিতে সামনের গাড়িও ঠিকমতো দেখা যায় না। উন্নয়ন কাজের জন্য সড়কের কার্পেটিং তুলে ফেলায় অসমতল রাস্তায় গাড়ি চলে লক্কর ঝক্কর। ২০ মিনিটের পথ যেত লাগছে ১ ঘণ্টা। ঝাঁকুনিতে গাড়িতে বসে থাকাই মুশকিল। প্রায়ই সড়কের মাঝখানে উল্টে যাচ্ছে যানবাহন। কখনো চাকা পাংচার, আবার কখনো বা ভাঙছে চাকার পাতি। তাতে সড়কেই নষ্ট হচ্ছে যানবাহন আর যান সাড়াতে সময় লাগছে দু-তিন দিন।

এ অবস্থা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের মুক্তাগাছা অংশের। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দিয়ে উত্তরবঙ্গসহ দেশের প্রায় ২০ জেলার যানবাহন চলাচল করে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উন্নয়ন কাজের এ অংশের প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত। এর মধ্যে মুক্তাগাছা-কালিবাড়ীর ১০ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন কাজ হয়েছে মাত্র ৬০ শতাংশ। আগে ছিল কাজের ধীরগতি। আর এখন একেবারেই কাজ বন্ধ থাকায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়কটি। বর্ষা এলেই সৃষ্টি হয় খানাখন্দের। চরম ভোগান্তি আর ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। তবে কাজ দ্রম্নত শেষ করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

মধুপুর-ময়মনসিংহ জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্প গত ২০২১ সালের ৮ জুন একনেকে অনুমোদন হয়। প্রকল্পর ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ১০৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। তার মধ্যে মুক্তাগাছা অংশের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৯৩১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। কাজ বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। ৪ প্যাকেজ বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পের ৩টি প্যাকেজই রয়েছে মুক্তাগাছা অংশে। এ অংশের মেয়াদ রয়েছে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত। কাজ শুরুর পর থেকেই মন্থর গতিতে চলছিল। আর এখন একেবারেই বন্ধ রয়েছে এ অংশের কাজ।

এই রাস্তায় প্রতিদিন মোটর সাইকেলে চলাচল করেন তারিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, সামান্য বৃষ্টিতে এই রাস্তায় মোটর সাইকেল চালাতে গেলে চাকার ঝাঁকুনিতে সমস্ত শরীরে কাঁদা লেগে কাপড় নষ্ট হচ্ছে। আর খড়ার সময় ধুলোবালিতে চলা আরও মুশকিল। রাস্তার উন্নয়ন কাজ দ্রম্নত শেষ করার দাবি জানান তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, 'বৃষ্টি হলে খানাখন্দে ভরে যাওয়া এ সড়ক দিয়ে যাওয়া ছেড়ে দেই। জানি না সড়কটি নির্মাণে আর কত সময় লাগবে।' পাইকারি কাঁচামাল ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল বলেন, রাস্তার এত খারাপ অবস্থার কারণে আমাদের ব্যবসা পরিচালনা করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। কাঁচামাল আনা-নেওয়ার সময় রাস্তায় যানজট লেগে যায়। আর খানাখন্দের কারণে গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে নিয়মিত।

ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ওহেদুজ্জামান বলেন, 'এই অংশে দুইটা প্যাকেজে কাজ চলমান। ইতিমধ্যে ব্রিজ-কালভার্টের কাজ শেষ হয়েছে। আমরা কাজ দ্রম্নত শেষ করতে ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই কাজ শেষ হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে