শুরু হয়েছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। বুধবার (০৯ অক্টোবর) ষষ্ঠী তিথিতে বেলতলায় দেবীর অধিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজা। আগামী রোববার (১৩ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে ৫ দিনব্যাপী এ উৎসব। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবের এই আমেজকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন সরকারি ছুটি বৃদ্ধির মাধ্যমে। এছাড়া চট্টগ্রামে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২ হাজার ৪৫৭টি মন্ডপে। এর মধ্যে মহানগরে ২৯২টি ও জেলার ১৫টি উপজেলায় দুই হাজার ১৬৫টি আনুষ্ঠানিক মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্গাপূজা হচ্ছে বেশ কিছু পারিবারিক মন্ডপেও।
সরকারি ছুটির ক্যালেন্ডারের তথ্য অনুযায়ী, আগামী রোববার (১৩ অক্টোবর) পূজার ছুটি। আর ১১ ও ১২ অক্টোবর শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। এ তালিকায় বৃহস্পতিবার যুক্ত হয়ে দুর্গাপূজায় মোট চারদিন ছুটি পাচ্ছে চাকরিজীবীরা। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম মহানগরে ১৯২টি মন্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে। এরমধ্যে জেএমসেন হল মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় ভাবে দুর্গোৎসব উদযাপিত হচ্ছে। এছাড়া রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম, হাজারী গলি পূজা মন্ডপ, চট্টেশ্বরী কালী মন্দির, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কুসুম কুমারী স্কুল পূজা মন্ডপ, আগ্রাবাদ একতা সংঘ পূজা মন্ডপ, দক্ষিণ নালাপাড়া সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্ডপ, উত্তর নালাপাড়া সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্ডপ, প্রবর্তক সংঘ বাংলাদেশ দুর্গাপূজা মন্ডপ, জামালখাল চেরাগী পাহাড় সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্ডপ, দেওয়ানজী পুকুর পাড় সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্ডপ, রাজাপুকুর পাড় সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্ডপ, আসকার দিঘির পাড় লোকনাথ মন্দির সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্ডপ, সদরঘাট কালী মন্দির, পাথরঘাটা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির পূজা মন্ডপ, পাথরঘাটা গঙ্গা বাড়ি সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্ডপ, গোসাইলডাঙ্গা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির পূজা মন্ডপসহ বিভিন্ন মন্দির ও মন্ডপে দুর্গোৎসব উদযাপিত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১৫টি উপজেলায় দুই হাজার ১৬৫টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য জানান, এবার চট্টগ্রাম মহানগরের ১৯২টি মন্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে। নগরের প্রধান পূজা মন্ডপ জেএমসেন হলসহ প্রতিটি পূজা মন্ডপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও রয়েছে। এছাড়া পূজার ছুটি একদিন বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎসবের এই আমেজ আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি নিতাই প্রসাদ ঘোষ বলেন, পূজা উদযাপনের সার্বিক নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অধিকাংশ মন্ডপে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসারসহ সরকারি সব সংস্থা পূজার আয়োজনে সহযোগিতা করছেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ষষ্ঠী থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। প্রতিটি পূজা মন্ডপে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি পূজা মন্ডপের নিরাপত্তায় টহল দিচ্ছে।