টঙ্গীতে ময়লা-আবর্জনায় ভরা ড্রেন

মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পথচারীরা

প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) ও টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কেরানিহাট গরু বাজার সংলগ্ন মহাসড়কের পাশে উন্মুক্ত স্থানে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনা ও হাট-বাজারের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে স্থানটি পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। সড়কের পাশে এ ভাগাড় থেকে দুর্গন্ধ ছড়ানোয় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পথচারী, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী ও অফিসগামী মানুষ। এতে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে। স্থানীয়রা বলছেন, এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো পরিবহন, যাত্রী ও পথচারী ও শিক্ষার্থী যাতায়াত করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও যথাযথ তদারকি না থাকায় দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলছে না বলে অভিযোগ তাদের। সরেজমিন দেখা গেছে, চট্টগ্রাম- কক্সবাজার মহাসড়কের কেরানিহাট গরু বাজার সংলগ্ন মহাসড়কের পশ্চিম পাশে বিশাল একটি অংশজুড়ে বিভিন্ন ধরনের উচ্ছিষ্ট ময়লা-আবর্জনা, হাট-বাজার ও খাবার হোটেলের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী ও বাজারের কিছু ব্যবসায়ী এসব বর্জ্য ফেলছেন। এ মহাসড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন উপজেলার কেওচিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কয়েক বছর ধরে আমাদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পথচারী জমির উদ্দিন, জালাল আহমদ, মো. নাছিরসহ অনেকের ভাষ্য, এ মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করলে বা আশপাশের এলাকায় বসবাস করলে ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে বিভিন্ন রোগ হতে পারে। বিশেষ করে মুরগি ও মাছের নাড়িভুঁড়ির দুর্গন্ধে মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক আবদুর রহিম বলেন, এ মহাসড়ক দিয়ে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ আসা-যাওয়া করে। ময়লার স্তূপের দুর্গন্ধে সবাই অতিষ্ঠ। সামান্য বৃষ্টি হলে ময়লা-আবর্জনাসহ বৃষ্টির পানি কৃষি জমিতে গিয়ে পড়ছে। আবার জোরে বাতাস বইলে হোটেল-রেস্টুরেন্টের ব্যবহৃত টিসু্য মহাসড়কজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এত কিছুর পরও সমস্যাটি সমাধানে কেউ এগিয়ে আসছে না। সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কে এম আবদুলস্নাহ আল মামুন বলেন, ময়লা-আবর্জনা বৃষ্টির পানিতে মিশে আশপাশের জমি ও ডোবায় গিয়ে মিশছে। এ পানির মাধ্যমে পানিবাহিত ও ভাইরাসজনিত বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়াতে পারে। চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মঈনুদ্দিন ফয়সাল বলেন, এখনো পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে জায়গাটি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাতকানিয়া ইউএনও মিল্টন বিশ্বাস বলেন, অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে, টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, টঙ্গীতে ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে ড্রেন। সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় খাঁপাড়া রোড, সাতাইশ রোড, কলেজ গেট রোডসহ পশ্চিম থানা এলাকার প্রতিটি অলিগলির রাস্তায়। সংস্কার আর সচেতনতার অভাবে সামান্য কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরে গিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যায় এবং এলাকায় জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। একদিকে জলাবদ্ধতা অন্যদিকে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার ড্রেনের ভেতর জমা খালি বস্তা ও ময়লা পরিষ্কারের কার্যক্রম চালানো হয়। সৌদি মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জনের একটি টিম এ পরিষ্কার কার্যক্রমে অংশ নেন। মাওলানা আবু সুফিয়ান জানান, এলাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে জনগণের অসচেনতার কারণে। প্রতিদিন ময়লা-আবর্জনা দিয়ে ড্রেনগুলো ভরে রাখেন তারা। এজন্য মূলত পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হয়। সবাই যদি নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলে তাহলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির আশঙ্কা কমে যাবে।