বাঁশখালীতে চা বাগানের নির্মাণাধীন স্কুলভবন ভাঙচুর, অনিশ্চিত পাঠদান
প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাঁদপুর-বেলগাঁও চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে বাধা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। চা শ্রমিক শিশুদের জন্য নির্মিত সেমিপাকা স্কুল ঘরটি ভাঙচুর করায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর স্কুল জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গত ২ অক্টোবর এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সরেজমিন দেখা যায়, 'নির্মাণাধীন স্কুল ভবনের চারপাশে ইট-বালুসহ নানা সরঞ্জাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। নতুন নির্মাণাধীন প্রতিটি দেয়াল ভাঙা। দেখেই বোঝা যাচ্ছে স্কুল ভবনে চলেছে তান্ডব। বন্ধ রয়েছে পাঠদান। খেলাধুলার মাঠেও কোন খেলাধুলার দৃশ্য চোখে পড়েনি।
জানা যায়, 'চাঁদপুর-বেলগাঁও চা-বাগান শ্রমিকদের সন্তানদের জীবনমান উন্নয়ন ও জীবনমুখী শিক্ষা নিশ্চিত ২০০৯ সালে চা বাগানের নিজস্ব জায়গায় প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে চা-বাগান কর্তৃপক্ষ। তবে স্কুলটিতে পড়ালেখার মনোরম পরিবেশ না থাকায় কর্তৃপক্ষ নতুন করে সেমিপাকা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। নির্মাণকাজ শুরু হলে খেলার মাঠ নষ্ট হওয়ার অভিযোগে কাজ বন্ধ করে নির্মাণকৃত ভবনটি ভেঙে দেয় প্রভাবশালীরা।
চা শ্রমিকরা বলেন, 'আমরা গরিব মানুষ। আমাদের সন্তানরা দূরে কোথাও গিয়ে পড়ালেখা করতে পারে না। কারণ স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অনেক দূরে। চা শ্রমিকদের অনুরোধে ২০০৯ সালে চাঁদপুর-বেলগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে বাগান কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে বাঁশের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি স্কুল ঘরটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ নতুন একটি সেমিপাকা ঘর নির্মাণ শুরু করে। হঠাৎ কিছু স্থানীয় বখাটে স্কুল ভবনের জায়গাটি তাদের খেলার মাঠ বলে দাবি করে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর নির্মাণাধীন ভবনটি ভেঙে ফেলে। এ ঘটনার পর থেকে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে আমাদের সন্তানদের স্কুলজীবন। এ ঘটনায় আমরা দোষীদের শাস্তি কামনা করি।'
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক বলেন, 'দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে স্থানীয়রা এই মাঠে খেলাধুলা করে আসছিল। উপজেলা প্রশাসন গত বছর মাঠটি ইউনিয়নের মিনি স্টেডিয়াম ঘোষণা করে। কিন্তু হঠাৎ চা-বাগান কর্তৃপক্ষ মাঠে এসে স্কুল ভবন নির্মাণ করায় স্থানীয় ছাত্র-জনতারা ক্ষুব্ধ হয়ে ভাঙচুর করেছে।' পুকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসহাব উদ্দীন বলেন, 'এ ঘটনা কারা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এরপর চা বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হবে।'
বাঁশখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, 'এ ঘটনায় চা বাগান কর্তৃপক্ষ থানায় একটি জিডি করেছে। রামদাশ মুন্সির হাট তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ চাইলে এখন থেকে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারবেন।'