ঝিনাইদহে গেল এক মাসের টানা ভারী বৃষ্টিতে কৃষিজমিতে পানি জমে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির পানি জমে জেলার ১১০ হেক্টর ধান ও ২১০ হেক্টর জমির সবজি নষ্ট হয়েছে। এছাড়া জেলা ও ৬ উপজেলায় প্রায় সব কৃষকের কমবেশি ধান সবজি নষ্ট হয়েছে। ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছে ঋণ করে আবাদ করা কৃষকরা। প্রায় ১০ বছরে এমন টানা বৃষ্টি হয়নি ঝিনাইদহ এলাকায়। চলতি মৌসুমের শেষ দিকে এসে এমন ভারী বৃষ্টি হওয়ায় ফসল রক্ষার প্রস্তুতি ছিল না জেলার কৃষকদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছর জেলায় ধানের আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৫৯৮ হেক্টর। বৃষ্টিতে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে ১১০ হেক্টর জমির ধান। একই সময় জেলায় সবজির আবাদ রয়েছে ৫ হাজার ৭০৬ হেক্টর। এরমধ্যে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে ২১০ হেক্টর জমির সবজি।
সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক বিলস্নাল হোসেন জানান, তিনি এ বছর এক বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলেন। একটু নিচু জমি হওয়ায় গত মাসের টানা বৃষ্টিতে তার ধান সম্পন্ন নষ্ট হয়ে গেছে।
শৈলকুপা উপজেলার দুধসর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, 'এক বিঘা জমিতে কাঁচা মরিচের আবাদ করেছিলাম। চলতি মৌসুমের টানা বৃষ্টিতে ক্ষেতে পানি জমে সব মরিচের গাছ মারা গেছে। মানুষের কাছ থেকে ধারদেনা করে মরিচের আবাদ করেছিলাম। এখন সব মরিচ গাছ মরে গেছে, ঋণ শোধ করব কিভাবে সেই চিন্তায় আছি।'
জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার পাতবিলা গ্রামের শমসের আলী জানান, 'আমি চলতি মৌসুমে ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। আর কয়েকদিন পরেই ধানের শীষ বের হতো। কিন্তু মৌসুমের শেষদিকে এসে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় ৩ বিঘা ধানই তলিয়ে গেছে। দীর্ঘ বছর এ অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় নিচু জমিতে এ বছর ধান আবাদ করেছিলাম।' পানিতে তলিয়ে না গেলে তিন বিঘা জমিতে প্রায় ৬০ মণ ধান পেতাম বলে যোগ করেন।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, ভারী বর্ষণে ঝিনাইদহ জেলার ধান ও সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে অনেকের জমির ধান ও সবজির আবাদ সম্পন্ন নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় সব কৃষকের কিছু না কিছু জমির ধান সবজি নষ্ট হয়েছে। যাদের জমির ধান ও সবজি এখনো ভালো আছে কৃষি বিভাগ থেকে তাদের নানা ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।