কালিয়াকৈরে জাল দলিল করার দায়ে ১৪ জনের নামে ওয়ারেন্ট

প্রকাশ | ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে জাল দলিলের মাধ্যমে নিরীহ এক চা-দোকানির জমি হাতিয়ে নেওয়ার অপরাধে ১৪ জন ভূমিদসু্যর নামে ওয়ারেন্ট জারি করেছেন আদালত। এদিকে, মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদীকে হুমকি দিচ্ছেন ভূমিদসু্যরা। এতে আতঙ্কে রয়েছেন ওই চা-দোকানির নিরীহ পরিবার। ভোক্তভোগী ছফুরা বেগম ও সিআইডি তদন্ত প্রতিবেদন ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের জালশুকা গ্রামের বাসিন্দা খোয়াজ উদ্দিন শেখের দুই ছেলে যথাক্রমে মৈজদ্দিন শেখ ও জৈনউদ্দিন শেখ মারা গেলে তার ওয়ারিশরা ১৯৪২ সালে তাদের সম্পত্তি মৈজদ্দিন শেখের কাছে বিক্রি করেন। এরপর মৈজদ্দিনের মৃতু্যর পর ওই সম্পত্তি তার স্ত্রী ও চার ছেলের নামে এসএ রেকর্ডভুক্ত হয়। কিন্তু ভুলবশত পশ্চিম খোলাপাড়া মৌজায় একটি দাগ এসএ রেকর্ডে মৈজদ্দিনের ছেলে আমির উদ্দিনের স্থলে জৈনদ্দিনের ছেলে হাফিজ উদ্দিনের নাম ওঠে। পরবর্তী সময়ে আরএস রেকর্ড আগত হলে মৈজদ্দিনের স্ত্রী বাছিরন নেছা ও চার ছেলে আমির উদ্দিন, জামত আলী, আব্দুল গফুর ও কফিল উদ্দিনের নামে শুদ্ধভাবে আরএস রেকর্ড লিপিবদ্ধ হয়। পরে মৈজদ্দিনের স্ত্রী ও চার ছেলের মৃতু্যর পর তাদের ওয়ারিশরা পৈতৃক সূত্রে জমির মালিক হয়ে ভোগ-দখল করে আসছিলেন। কিন্তু গত ২০০৮ সালে ভূমি জালিয়াত চক্রের মূলহোতা রবিউল করিম জালিয়াতির মাধ্যমে কাল্পনিক দাতা সাজিয়ে তার স্ত্রী শারমিন করিম মুন্নির নামে একশ' সাড়ে ৭৭ শতাংশ জমির একটি আমমোক্তারনামা দলিল করেন। ওই দলিলমূলে ২০২৩ সালের ৯ জুলাই শারমিন করিম মুন্নি একটি রেজিস্ট্রি বয়নাপত্র দলিলমূলে জালিয়াত চক্রের সদস্য আনিছ আলী, আব্দুল বাছেদ, জামাল উদ্দিন, আজাহারুলসহ সাতজনের নামে হস্তান্তর করেন। এরপর ভূমি জালিয়াত চক্রের মূলহোতা রবিউল করিমের পরামর্শে চক্রের সদস্য আনিছ আলী, আব্দুল বাছেদ, জামাল উদ্দিন, আজাহারুলসহ ১৫-১৬ জন ওই জমি জবর-দখলের চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে পৈতৃক সূত্রে ওই জমির মালিক চা-দোকানি ছফুরা বেগমসহ অন্য ওয়ারিশ বাধা দেয়। এ ঘটনায় তিনি গাজীপুর আদালতে একটি সিআর মামলা করেন। আদালত মামলাটি গাজীপুর সিআইডিকে তদন্ত করার নির্দেশ করেন। সিআইডি তদন্ত করে শারমিন করিম মুন্নির আমমোক্তারনামা দলিলটি প্রাথমিকভাবে জাল প্রমাণ পায়। সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনের পর গত ২২ সেপ্টেম্বর ওই জালিয়াত চক্রের মূলহোতা রবিউল করিম, দলিল লেখক তুহিন খান, তমছের আলীসহ ১৪ জনের নামে ওয়ারেন্ট জারি করেন আদালত। এরপর থেকে ওই আসামিরা গা-ঢাকা দিলেও বিভিন্ন মাধ্যমে বাদী ছফুরা বেগমকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। এ ঘটনায় গত ৩ অক্টোবর কালিয়াকৈর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ছফুরা বেগম। কালিয়াকৈর থানার ওসি রিয়াদ মাহমুদ জানান, ওয়ারেন্টের কপি এখনো থানায় পৌঁছায়নি। ওই কপি থানায় পৌঁছলে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হবে। তবে বাদীকে হুমকির ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।