মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের-২ আওতায় ঘর বরাদ্দ দেওয়ার জন্য এক ব্যক্তির কাছ থেকে বেআইনিভাবে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মোবারুলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে।
চেয়ারম্যান টাকা ছাড়া ঘর বরাদ্দ না দেওয়ার হুমকি দিলে খেলু মিয়া নামে এক ব্যক্তি তাকে ৪২ হাজার টাকা ঘুষ দেন বলে পরিষদে সংরক্ষিত আসনের সদস্য তুলনা বেগম ও চৌকিদার লিটন মিয়া সাক্ষ্য দিচ্ছেন।
এদিকে, খেলু মিয়ার এখন টাকার বিনিময় পাওয়া শেখ হাসিনার উপহারের ঘরে শান্তিতে বসবাসের কথা থাকলেও ঋণের যন্ত্রণায় পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাকে। কারণ, চেয়ারম্যানকে দেওয়া ঘুষের টাকা ওই ব্যক্তি সুদের ওপর ঋণ করেছেন।
খেলু জানান, নিজের কোনো বসতভিটা না থাকায় তিনি আজমিরীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে মামার বাড়িতে বসবাস করতেন।
সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় জমিসহ ঘর উপহার দিবে জেনে বিরাট গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে আবেদন করেছিলেন। অনেক আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে উপজেলা প্রশাসনের চূড়ান্ত তালিকায় তার নাম ওঠে। এ ঘটনা প্রায় এক বছর আগের।
তালিকায় নাম ওঠার পর চেয়ারম্যান মোবারুল তার কার্যালয়ে খেলু মিয়াকে ডেকে নিয়ে জানান, ঘর পেতে হলে টাকা লাগবে। টাকা না দিলে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে না। খেলু বাধ্য হয়ে মাসোহারা সুদের ওপর ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে চেয়ারম্যানকে দেন।
এ টাকায় হবে না জানিয়ে তাকে ফেরৎ দেন মোবারুল। পরে আরও ২২ হাজার টাকা ঋণ করে তিনি মোট ৪২ হাজার টাকা দেন। খেলু আরও বলেন, চড়া সুদের ওপর টাকা এনে চেয়ারম্যানকে দিয়েছি। সেই সুদের ঘানি টানতে টানতে জীবন শেষ। পরিবার-পরিজন নিয়ে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকের কাজ করতে হচ্ছে। পাওনাদারদের তাগিদে ঘরে থাকতে পারছি না।
বর্তমানে দেশ আওয়ামী দুঃশাসন থেকে মুক্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি ঘুষ দেওয়া ৪২ হাজার টাকা ফেরৎ চেয়েছেন।
সদর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ লিটন মিয়া জানান, সরকারি ঘর দেওয়ার জন্য খেলু মিয়ার কাছ থেকে চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মোবারুল ৪২ হাজার টাকা নেওয়ার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন।
সংরক্ষিত আসনের সদস্য তুলনা বেগম বলেন, 'চেয়ারম্যানের বাড়িতে বসে খেলু মিয়া টাকা দিয়েছেন চেয়ারম্যানকে। প্রথমে ৪২ হাজার টাকা তিনি নিতে চাননি। তার দাবি ছিল ৫০ হাজার। পরে অনেক বুঝিয়ে তাকে সম্মত করিয়ে ৪২ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মোবারুলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
যোগাযোগ করা হলে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল ভৌমিক বলেন, এমন ঘটনা কেউ আমাকে অবগত করেনি।