নকলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি জেলায় এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃতু্য
প্রকাশ | ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
এই রোদ এই বৃষ্টি। দিনে কিছুটা ভরসা পেলেও রাতে থাকে সবাই ভয়ে ও আতংকে। সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুর। পাঁচটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ জেলা। এর মধ্যে নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতি ও শ্রীবরদীসহ এই চারটি উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ১৯৮৮ সালের বন্যাকেও হার মানিয়েছে এবারের বন্যা। গ্রামগঞ্জ ছাড়াও শহরে প্রবেশ করেছে বন্যার পানি। জেলায় পানিবন্দি লাখো মানুষ। চলছে উদ্ধার তৎপরতা। তবে চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। শেরপুর জেলায় কোথাও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি আবার কোথাও অবনতি হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে যাওয়ায় নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী এবং শ্রীবরদী উপজেলার উজানে ১৫ ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে।
আবার ঢলের পানি ভাটির দিকে নামতে থাকায় শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ীর উপজেলার কলসপাড়, যোগানিয়া, মরিচপুরাণ ইউনিয়ন, নকলা উপজেলার পৌরসভা, নকলা গণপদ্দি, উরফা ইউনিয়ন, ঝিনাইগাতীর হাতিবান্দা ও মালিঝিকান্দা ইউনিয়ন এবং সদর উপজেলার গাজীরখামার, পাকুড়িয়া, ধলা ও কামারিয়া ইউনিয়নসহ ১৩ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। এসব এলাকার পানিবন্দি মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যেতে দেখা গেছে।
উজান থেকে বন্যার পানি নামার পর ওইসব এলাকার বাড়িঘর ও গ্রামীণ রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হওয়ার ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ভেসে উঠেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কিছু মানুষ রান্না করা খাবার ও ত্রাণসামগ্রী পেলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন বন্যার্তরা। সেসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তরা বাড়িঘর দ্রম্নত মেরামতের জন্য পুণর্বাসন সহায়তা কামনা করেছেন। এদিকে, রোববারও পাহাড়ি ঢলের পানিতে নকলা উপজেলার ২জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এনিয়ে পাহাড়ি ঢলে গত ৪ দিনে জেলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো দুই নারীসহ ৮ জন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় শেরপুরের পাঁচ উপজেলায় ৪৬ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমির রোপা আমন আবাদ, একহাজার ২০০ হেক্টর জমির সবজি আবাদ, বস্তায় চাষ করা ৪ লাখ ৬৯ হাজার ২৯৪ বস্তা আদা সম্পূর্ণ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে জেলায় অন্তত এক লাখ ৭২ হাজার ৬৩০ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যার কারণে পানি ওঠায় জেলায় ২৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, পাহাড়ি খরস্রোতা চেলস্নাখালি ও ভোগাই নদী এখন বিপদসীমার বেশ নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি কিংবা উজানে ভারী বর্ষণ না হলে নদ-নদীগুলোর পানি আরও কমবে এবং বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।