মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১
গুরুদাসপুরে জলাবদ্ধতা

১৫ বছর ধরে ২ হাজার বিঘা জমিতে চাষ বন্ধ

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
  ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
নাটোরের গুরুদাসপুরে জলাবদ্ধতা দূরীকরণের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন -যাযাদি

নাটোরের গুরুদাসপুরে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে জলাবদ্ধতার কারণে বামনকোলা ও গারিষাপাড়া মাঠের প্রায় দুই হাজার বিঘা জমিতে দুই ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না কৃষক। বছরে একটি ফসল ইরি, আমন চাষ করলেও থাকতে হয় অনিশ্চয়তায়। বর্ষা ও টানা কয়েক দিন বৃষ্টি হলেই ডুবে যায় ধান। ফসলের মাঠ থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি নিয়ে নিজেদের ফসল রক্ষার জন্য সোমবার সকালে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী।

জানা যায়, উপজেলার বামনকোলা ও গারিষাপাড়া ফসলের মাঠটিতে প্রায় দুই হাজার বিঘা জমি রয়েছে। ২৫ বছর পূর্বেও এই মাঠে প্রতিটি জমিতে কৃষকরা তিন ফসল উৎপাদন করত। অপরিকল্পিত পুকুর খনন ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখেই অপরিকল্পিতভাবে আঞ্চলিক সড়ক নির্মাণ করার কারণে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে পাঁচ শতাধিক কৃষককে। মাঠের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে একটি পাকা সড়ক। সেখানে ২০ বছর পূর্বে অপরিকল্পিতভাবে পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছিল। ১৫ বছর আগে সেটি ভেঙে ব্যক্তি মালিকানাধীন বাড়ি নির্মাণ হয়। সেই থেকে গারিষাপাড়া ও বামনকোলা মাঠের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এক ফসল চাষ করেও অনিশ্চয়তায় থাকতে হয় চাষিদের।

বামনকোলা গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, 'বামনকোলা মাঠে তার পাঁচ বিঘা জমি রয়েছে। তার বাবা সেই জমিতে এক সময় তিন ফসল উৎপাদন করতেন। এখন তিনি এক ফসল চাষ করতেই অনিশ্চয়তায় থাকেন। জমি চাষাবাদ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। এ বছর বর্ষা ও টানা বৃষ্টিতে ধানের জমি প্রায় ডুবে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। ডুবে গেলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন। অতি দ্রম্নত প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি নিষ্কাশনের দাবি জানান। গারিষাপাড়া গ্রামের সমাজসেবক মিজানুর রহমান জানান, দুই গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষকের জমি রয়েছে এই মাঠে। দীর্ঘ ১৫ বছর জলাবদ্ধতার কারণে দুটি ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কৃষকদের কথা চিন্তা করে দ্রম্নত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা করা দরকার।

এদিকে, ইতিপূর্বে প্রশাসনকে জানিয়ে কোনো কাজ হয়নি দাবি করে বামনকোলা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য রফিক হোসেন, আবুল হোসেন, কৃষক আসাদ মোলস্না, লেদু প্রামাণিকসহ শতাধিক গ্রামবাসী মানববন্ধন করেন। এ সময় তারা জলাবদ্ধতা দ্রম্নত নিরসনের দাবি তুলে বক্তব্য রাখেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, 'ইতিপূর্বেও ওই মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসনে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অধিদপ্তর উদ্যোগ নিয়েছিল। গ্রামের অভ্যন্তরীণ ঝামেলার কারণে বেশি দূর অগ্রসর হওয়া যায়নি। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় সরেজমিন গিয়ে দ্রম্নত ব্যবস্থা নেবেন। ইউএনও সালমা আক্তার বলেন, কৃষকদের সহযোগিতায় শিগগিরই জলাবদ্ধতা নিরসন করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে