বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১

আগাম জাতের ধান কাটা-মাড়াইয়ে ধুম

কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে আগাম জাতের আমন ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে কৃষক -যাযাদি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আগাম জাতের আমন ধান কাটা মাড়াইয়ের ধুম পড়েছে। আশানুরূপ ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের চোখে-মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক। কৃষকরা বাড়তি লাভ হিসেবে চাষাবাদ করেছেন স্বল্পমেয়াদি এই আগাম জাতের আমন ধান। এ ধানের কাঁচা খড় গোখাদ্য হিসেবে বেশি দামে বিক্রি হওয়ায় বাড়তি আয় হচ্ছে কৃষকের।

এদিকে আগাম জাতের ধান চাষ করায় সেই ধান কাটার পর একই জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করা যায়, এতে একই জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদন হওয়ায় বাড়তি লাভ পায় কৃষকরা। এ কারণে এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ সারা বছরই সবুজে ভরা থাকে। জমিগুলোতে তিন থেকে চারটি ফসল হওয়ায় আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় ২ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে ৯ হাজার ৩২৫ মেট্রিকটন আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। হেক্টরপ্রতি এসব ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে গড়ে ৩.৪-৩.৬ মেট্রিকটন।

এর মধ্যে আগাম জাতের ধান রয়েছে হাইব্রিড ও উফশী জাতের তেজগোল্ড, ব্রী-৯০, বিনা-১৭, সম্পাকাটারি, জাটাপাড়ি, ধানিগোল্ডসহ আরও বিভিন্ন জাত। উপজেলার পলি এলাকা হিসেবে পরিচিত শিবনগর ইউনিয়নের রাজারামপুর, গোপালপুর, জাফরপুর, পলিশিবনগর, শমসেরনগর, কয়রাকোল এলাকায় এই আগাম জাতের ধান সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হয়েছে। এই এলাকাটি পলি মাটি হওয়ায় এই আগাম জাতের ধান কেটে একই জমিতে শীতকালীন সবজি ও আলু চাষ করা হয়।

সরেজমিনে শিবনগর ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে আগাম জাতের আমন ধান কাটা মাড়াইয়ের ধুম পড়েছে। কেউ ধান কাটছেন, কেউ আবার ধান কেটে কাঁধে করে জমি থেকে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ মাড়াই করে বস্তায় ভরছেন। অনেকে ধান কাটার পর আগাম আলুসহ শীতকালীন রবিশস্য চাষের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এজন্য মাঠে-মাঠে কিষাণ-কিষাণিদের চরম ব্যস্ততা, যেন দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের।

স্থানীয় কৃষক ওয়াহেদুল চৌধুরী বলেন, এক সময় আগাম আলু চাষের জন্য জমি ফেলে রাখা হতো। এখন স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন আগাম জাতের ধান আবিষ্কার হওয়ায় জমি ফেলে রাখা হয় না। ধানের পর আগাম আলু চাষ করলে আলুর ফলন ভালো হয়, দামও ভালো পাওয়া যায়। তাই ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ জমিগুলোতে প্রতি বছর আগাম ধান, আলু, ভুট্টাসহ চার ফসল উৎপাদন হচ্ছে। এতে করে তারা লাভবান হচ্ছে।

কৃষক ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, এ বছর তিন বিঘা জমিতে আগাম জাতের ধান লাগিয়েছেন তিনি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে ফলন ভালো হয়েছে, ইতিমধ্যে ১ এক বিঘা জমির ধান কেটেছেন। বাজারে দামও পেয়েছেন ভালো।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, কৃষকরা আগাম আমন ধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছেন, ধান কাটার পর ওই জমিতে আগাম আলু রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। দামও ভালো পাচ্ছেন তারা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে