শুধু রাজধানী ও এর আশপাশেই নয়, সারাদেশেই বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। চলতি মাসের শুরুতেই চাঁদপুরে অর্ধশত রোগী জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, জেলার বন্যা ও জলাবদ্ধতা কবলিত এলাকা এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ছুটে আসছে মানুষ। জ্বরের সঙ্গে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিলে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার রায়শ্রী এলাকার বাসিন্দা বিলস্নাল হোসেনের বাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। পরে শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে তাকে ভর্তি হয়। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চারদিন ধরে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা স্বস্তিতে আছেন তিনি।
বিলস্নাল হোসেনের মতো জ্বরের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ছুটে আসা অর্ধশত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী, বেশিরভাগ পুরুষ। কেউ ঢাকা থেকে, চট্টগ্রাম থেকে জ্বর নিয়ে গ্রামের বাড়ি আসেন। সেখান থেকে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ফিরছেন কর্মস্থলে। চাঁদপুর সদর উপজেলার ঘোষেরহাট এলাকার বাসিন্দা মিলন। তিনি চট্টগ্রামে কর্মস্থল থেকে জ্বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন। সেখান থেকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। পরীক্ষা শেষে তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে।
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের দেওয়া তথ্যমতে, সেপ্টেম্বর মাসে ৫৯ জন চিকিৎসা নিলেও অক্টোবরের প্রথম তিন দিনে ভর্তি হয় ৩২ জন রোগী।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জ্বরের সঙ্গে বমি, ডায়রিয়া, মাথা ও শরীর ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রম্নত হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের জলাবদ্ধতার শিকার ফরিদগঞ্জ উপজেলা। সেখানে পানি কমে যাওয়ার পর নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বাসিন্দারা।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. জুয়েল বলেন, শুক্রবার তার হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিল ৯ জন। চলতি মাসে প্রকোপ বেশি দেখা দিয়েছে।
জানতে চাইলে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. গোলাম মাওলা বলেন, চলতি মাসের শুরুতে ১২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়। শুক্রবার ছয় জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহাদৎ হোসেন বলেন, অক্টোবরের ৩ তারিখে ভর্তি হয় ১৩ ডেঙ্গু রোগী। তিন দিনে ৫০ জন। জেলার সবকটি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সগুলোর মধ্যে সদর জেনারেল হাসপাতালে ১২ জন, কচুয়ায় ৮ জন, হাজীগঞ্জে ৬ জনসহ ৫০ জন ভর্তি। আগস্ট মাসে ৭৫ জন হলেও সেপ্টেম্বর মাসে ১শ' ৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নেয়।