তাঁতের কাপড় তৈরির প্রয়োজনীয় কাঁচা মাল, রং সুতা ও রাসায়নিক দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং তৈরি কাপড়ের মূল্য কম হওয়ার কারণে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজরে তাঁত শিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। বলতে গেলে প্রায় বিলুপ্তই হতে বসেছে এক সময়ের প্রসিদ্ধ এ শিল্পটি। উপজেলায় মোট প্রায় ৪০ হাজার তাঁত ছিল বলে বেসরকারি তথ্যে জানা গেছে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে বিদু্যৎচালিত পাওয়ারলুম কারখানা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে অধিকাংশ তাঁত কল বসে গেছে। এর ফলে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত ক্ষুদ্র মালিকসহ প্রায় অর্ধেকের বেশিসংখ্যক শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আড়াইহাজার উপজেলার তাঁত প্রধান এলাকা তাঁতীপাড়া, শ্রীনিবাসদী, ক্ষিরদাসাদী, রামচন্দ্রদী, করইতলা, উচিৎপুরা, জোকারদিয়া নয়াপাড়া, পাঁচগাঁও, ফাউসা, রাইনাদী, ভৈরবদী, সুলতানসাদী, বলস্নভদী, সিংহদী, বান্টি, কামরানীরচর, সম্ভুপুরা, জাঙ্গালিয়া- এ সব তাঁত প্রসিদ্ধ এলাকার জনগণের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পথই ছিল এক সময় এ তাঁত শিল্প। কিন্তু বর্তমানে উলিস্নখিত কারণগুলোর জন্য তাঁত শিল্প মালিকরা তাদের ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছেন। এর ফলে তাঁতকলের কারিগররা বেকার হয়ে পড়ছেন। বেশকিছু সংখ্যক শ্রমিক বিদু্যৎচালিত পাওয়ারলুম কারখানায় শ্রমিক হিসেবে যোগদান করলেও সব শ্রমিকের বিদু্যৎচালিত মেশিন চালনায় দক্ষতা না থাকায় তারা এখন বেকার। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি মহিলা ও শিশু শ্রমিকরা পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। বর্তমানে তাঁত শিল্পের করুণ অবস্থার কারণে এ পেশার সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। আড়াইহাজার উপজেলার তাঁত কলগুলোয় তৈরি শাড়ি, লুঙ্গি, ধুতি, চাদর, গামছা প্রভৃতির কদর নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলাসহ সমগ্র দেশে রয়েছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে আড়াইহাজারের তাঁত শিল্প আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে অনেকে জানান। তবে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য আড়াইহাজার তাঁতবোর্ড অফিসে যোগাযোগ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি।