কুমিলস্নার মুরাদনগর উপজেলার কোড়ের পাড় আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে এলাকার একটি মহলের ইন্ধনে ও শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা এবং বানোয়াট তথ্য দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে একটি মহল কলেজের শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন করে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর কলেজের কিছু শিক্ষার্থী বহিরাগতদের নিয়ে আন্দোলন করে এবং অধ্যক্ষের কক্ষ ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাবেক এমপি ইউসুফ আবদুলস্নাহ হারুন উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ হিসেবে এ কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে কলেজটিতে ডিগ্রি ও অনার্স কোর্স খোলা হয়। এ কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে মনিরুল ইসলাম ২০১০ সালে যোগদান করেন। তার হাত ধরেই কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণসহ ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বিগত সময়ে কলেজের কমিটিসহ বিভিন্ন কারণে এলাকার একটি মহলের সঙ্গে অধ্যক্ষের টানাপোড়েন চলছিল। সরকার পতনের পর হঠাৎ করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে উঠে ওই মহলটি। তারা অভিযোগ করে অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম সরকার ও তার সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রশিদ পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে কলেজের অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, নিয়োগ, স্বেচ্ছাচারিতা করছে। তবে শিক্ষককরা বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুসারে কলেজটি পরিচালিত হচ্ছে। কলেজ পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক প্রতি বছর আর্থিক বিষয় অডিট করা হয়। অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলামের সময়ে করা অডিটে কোনো অনিয়ম ধরা পড়েনি। সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রশিদসহ সব শিক্ষকের সঙ্গে অধ্যক্ষের সুসম্পর্ক বিরাজমান।
অভিযোগ করা হয়, অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম সরকার এই কলেজে যোগদান করার আগে বুড়িচং উপজেলার আবিদপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে চাকরিরত অবস্থায় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। ওই কলেজে খবর নিয়ে জানা গেছে, একজন শিক্ষক কলেজ থেকে সুবিধা না পেয়ে অধ্যক্ষসহ কমিটির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেন। কর্মরত একজন শিক্ষকের কাছে চাঁদাবাজির এমন তথ্য বানোয়াট। পরে তদন্তে এর সত্যতা মেলেনি। কোড়ের পাড় আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম সরকার বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ একটি মহলের তৈরি করা। শিক্ষার্থীরা এসব বিষয়ে অবগত নয়। তাদের ভুল বোঝানো হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধির বাইরে এখানে কিছুই করার সুযোগ নেই।'
কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন বলেন, 'ওই কলেজ নিয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে অভিযোগে সত্যতা পেলে বিধি মোতাবেক পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'