এনায়েতপুরে চাচি শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যা বিদু্যৎস্পৃষ্টে মামা-ভাগ্নেসহ ৩ জনের মৃতু্য
উখিয়ায় সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে যুবক কালীগঞ্জে সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত
প্রকাশ | ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই সন্ত্রাসী গ্রম্নপের গোলাগুলিতে যুবক ও গাজীপুরের কালীগঞ্জে সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এদিকে, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে চাচি শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যা, হবিগঞ্জের লাখাইয়ে বিদু্যতায়িত হয়ে মামা ভাগ্নের ও পাবনার সাঁথিয়ায় সাপের ছোবলে আরেকজনের মৃতু্য হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত-
উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসা এবং আরএসও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলিতে এক যুবক নিহত এবং ৫ জন আহত হয়েছে। গত বুধবার বিকালে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের হাকিম পাড়া ১৪ নম্বর এবং জামতলী ১৫ নম্বর ক্যাম্পের মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এডিআইজি) আমির জাফর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আব্দুর রহমান (১৯) হাকিম পাড়া ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-২ বস্নকের মোহাম্মদ আব্দুলস্নাহর ছেলে। আহতরা হলেন- উখিয়ার হাকিম পাড়া ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-২ বস্নকের সিদ্দিক আহমেদের ছেলে নুর মোহাম্মদ (৩২), সুলতান আহমেদের ছেলে মোহাম্মদ জোবায়ের (৩৭), রশিদ উলস্নাহ এর ছেলে মো. শাফায়েত ও দিল মোহাম্মদের ছেলে নুর আলম এবং জামতলী ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের লাল মিয়ার স্ত্রী নেসারা (৫৫)।
স্থানীয়দের বরাতে আমির জাফর বলেন, 'বুধবার বিকালে উলিস্নখিত এলাকায় মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা এবং আরএসও সন্ত্রাসীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষ ২০-২৫ রাউন্ড গুলি ছুড়লে ৬ রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হন।
খবর পেয়ে এপিবিএন পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে জামতলী এলাকাস্থ এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরের কালীগঞ্জে দুইপক্ষের সংঘর্ষে জাহিদুল ইসলাম শ্যামল (৫০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনা নিহতের ভাই শামসুল হক বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শ্যামল ওই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।
ওসি বলেন, 'শুনেছি হাতাহাতি হয়েছে। একজন আহত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।'
স্থানীয় সূত্র জানায়, একটি অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুইপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির পর হাতাহাতির ঘটনা হয়। এ সময় জাহিদুল ইসলাম শ্যামল আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে চাচি শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যা করেছে জাকারিয়া হোসেন (৩০) নামের এক যুবক। স্থল ইউনিয়নের নওহাটা চরে বুধবার সন্ধ্যায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার এনায়েতপুর থানার ওসি রওশন ইয়াজদানী জানান, হত্যাকান্ডের ঘটনায় ঘাতক জাকারিয়াকে আটক করা হয়েছে। তিনি একই গ্রামের খোরশেদ সরকারের ছেলে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছেন।
প্রতিবেশী আব্দুর রশিদ জানান, নওহাটা চরের খোরশেদ সরকারের ছেলে জাকারিয়া কৃষিকাজ করেন। তবে মানসিকভাবে কিছুটা বিকারগ্রস্ত ছিলেন। তার চাচা শ্বশুর মৃত শান্তা শেখের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বুধবার বাড়িতে অবস্থান কালে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগমের মাথা, দুই হাত দেহ থেকে আলাদা করে হত্যা করে। জাকারিয়া শরীরে রক্তাক্ত মাখা জামা পরে সটকে পরার সময় স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
লাখাই (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, হবিগঞ্জের লাখাইয়র পলিস্নতে বিদু্যতের তারে জড়িয়ে মামা-ভাগ্নের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার বুলস্না ইউনিয়নের গোয়াকরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের রহমত আলীর ছেলে জমসেদ মিয়া (৩২) এবং একই গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে ফরাজ মিয়া।
জানা যায়, ওইদিন সন্ধ্যায় হাওড় থেকে মাছ ধরে বাড়ি ফিরছিলেন ফরাজ মিয়া। অন্যদিকে জমসেদ মিয়া বাজার থেকে বাড়ির ফিরছিলেন। এমন সময় হঠাৎ আসা বৃষ্টি ও হালকা বাতাস শুরু হলে আকস্মিকভাবে মাথার উপর দিয়ে যাওয়া বিদু্যতের তার তাদের উপর ছিঁড়ে পড়ে। এতে উভয়ে বিদু্যতের তারে জাড়িয়ে যান। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হবিগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, খড়ার জালে পেঁচানো বিষাক্ত সাপের কামড়ে মারা গেছেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার শামুকজানি গ্রামের জাহেদ আলী খাঁ (৬৫)। তিনি ওই গ্রামের মৃত আবেদ আলী খাঁর ছেলে। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে তিনি মারা যান। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে উপজেলার শামুকজানি গ্রামে।
মৃত জাহেদের ভাগ্নে ইলিয়াস খাঁন জানান, বুধবার সন্ধ্যারাতে বাড়ির পাশে খড়ার জাল ওঠাতে গিয়ে জালের সঙ্গে পেঁচানো সাপ জাহেদ আলীকে ছোবল দেয়। পরে পার্শ্ববর্তী বেড়া উপজেলা চাকলা ইউনিয়নের পাচুড়ে গ্রামে বেলস্নাল কবিরাজের কাছে নিয়ে যায় স্বজনরা। সেখানে কবিরাজ বিষ নামিয়ে দিলে বাড়িতে চলে আসেন। রাত ৩টার দিকে হঠাৎ তার শরীর খারাপ হলে তাকে প্রথমে বেড়া হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে পাবনা মেডিকেলে নেওয়ার পথে রাস্তায় তিনি মারা যান।