তিন জেলায় আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও কৃষক লীগের ১১ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচ নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। এদিকে রংপুরে আওয়ামী লীগ নেতা নবী উলস্নাহ পান্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া নেত্রকোনার দুর্গাপুরে আ'লীগ-যুবলীগ ও কৃষক লীগের ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর-
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ আফজল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এনায়েত করিম অমি, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এ.কে.এম শামছুল ইসলাম খান মাসুম, তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক মোতাহার এবং সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন লাকিকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত মঙ্গলবার রাত ৩টায় তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক মোতাহারকে উপজেলা ধলা ইউনিয়নের কলমা গ্রাম থেকে ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন লাকিকে তাড়াইল-সাচাইল ইউনিয়নের কালনা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার সকাল ৯টায় জেলা শহরের নিজ নিজ বাসা থেকে এমএ আফজল, এনায়েত করিম অমি ও এ.কে.এম শামছুল ইসলাম খান মাসুমকে গ্রেপ্তার করের্ যাব। তাদের নামে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা রয়েছে।
পরে তাদের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুললে, আদলত নং-১ এর বিচারক পার্থ ভদ্র আসামিদের মধ্যে দুজনের জামিন মঞ্জুর করেন ও অন্য তিনজনকে জেলহাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করেন। জামিনে মুক্ত হলেন বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এনায়েত করিম অমি, ধর্ম-বিষয়ক সম্পাদক এ.কে.এম শামছুল ইসলাম খান মাসুম।
এর আগে রশিদাবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জুয়েল ও দানাপাটুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদ বিএনপি'র করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে আছেন।
রংপুর প্রতিনিধি জানান, রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত ফল বিক্রেতা মেরাজুল ইসলাম মেরাজ হত্যা মামলার আসামি মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি নবী উলস্নাহ পান্নাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার ভোরে নগরীর কলেজ রোড খামারপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই রংপুর সিটি বাজার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়। এদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মেরাজ। এ ঘটনায় নিহতের মা আম্বিয়া খাতুন বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলা মামলায় আসামি করা হয়েছে নবী উলস্নাহ পান্নাকে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি জানান, রাজশাহীর দুর্গাপুরে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নাশকতার মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও কৃষক লীগের ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পৃথক সময়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার দুপুরে হত্যাচেষ্টা ও নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- উপজেলার জয়নগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান (২৮), ঝালুকা ইউনিয়নের চৌপুকুরিয়া ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি জহরুল হক (৩৫), কিসমত গণকৈড় ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আসলাম আলী (৩৮), পৌর এলাকার শালঘরিয়া গ্রামের যুবলীগ কর্মী সুমন (৩৬) ও মাসুদ রানা মিঠু (৪০)। তবে তাদের নাম এজাহারে উলেস্নখ নেই বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর হত্যাচেষ্টা ও নাশকতা চালানোর অভিযোগ এনে থানায় মামলাটি করেন উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের চক জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের শাহাদত হোসেন।
বাদী এজাহারে উলেস্নখ করেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভু্যত্থানের আগের দিন অর্থাৎ গত ৪ আগস্ট উপজেলা সদরের মেডিকেল মোড়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এজাহার নামীয় আসামিরাসহ অজ্ঞাত আসামিরা প্রকাশ্যে দিবালোকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। আসামিরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহযোগিতাকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে ব্যাপক নাশকতা চালায়।
দুর্গাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৫ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। তবে তারা এজাহার নামীয় আসামি না হওয়ায় অজ্ঞাত হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়।