চাঁদপুরের স্বজনহারা ২৭টি পরিবার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির অপেক্ষায় রয়েছেন। গত ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে গুলিতে তারা প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন কর্মজীবী, খেটে খাওয়া মানুষ। এছাড়া স্কুল, কলেজ শিক্ষার্থী ও আইনজীবীও মারা যান।
নিহতদের পরিবারকে শান্ত্বনা দিতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা তাদের বাড়িতে ছুটে গেছেন। সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। সংশ্লিষ্টরা সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার কথাও ব্যক্ত করেছেন।
ছাত্র-জনতা আন্দোলনে নিহতদের অধিকাংশই ছিল শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ। তারা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে চারদিকে অমানিশার অন্ধকার দেখছেন। স্বজন হারানোর বেদনায় কাতর পরিবারগুলো চাইছেন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। সেই সঙ্গে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন।
সরকারি ওয়েবসাইটের তালিকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে চাঁদপুর জেলার ২৭ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ৮ জন, ফরিদগঞ্জে ৩ জন, হাজীগঞ্জে ৪ জন, মতলব উত্তরে ৬ জন, কচুয়ায় ২ জন এবং মতলব দক্ষিণে ৪ জন। নিহতরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ও কুমিলস্নায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন সময় গুলিতে প্রাণ হারান।
পৃথিবীর আলো দেখার আগেই গুলিতে বাবাকে হারাল এক অনাগত সন্তান। বিয়ের মাত্র আট মাসেই স্বামীকে হারিয়ে বিধবা হলেন হাজীগঞ্জের হান্নানের স্ত্রী মুক্তা। ১৮ জুলাই রাজধানীর মধ্য বাড্ডা এলাকায় গুলিতে নিহত হন আব্দুল হান্নান। তিনি উত্তর বাড্ডায় বেকারির লাইনম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ঢাকা মিরপুর ১০ নম্বরে পুলিশের গুলিতে নিহত কোরআনে হাফেজ সাব্বিরের বৃদ্ধ দাদা দুদু রাজা বর্তমান সরকারের কাছে নাতি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সেই সঙ্গে তিনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানান।
নিহত হলেন- চাঁদপুর সদর উপজেলায় আব্দুর রহমান দেওয়ান, আবু হোসেন মিজি, ইমরান হোসেন, মনিরুল ইসলাম উব্বু, সাব্বির রাজা, রোহান খান ও সিয়াম সরদার। ফরিদগঞ্জ উপজেলায় আব্দুল কাদির মান, আমির হোসেন ও সাদ্দাম হোসেন শাহাদাত। হাজীগঞ্জ উপজেলায় অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, রাসেল বকাউল, আজাদ সরকার ও আব্দুল হান্নান। মতলব উত্তর উপজেলায় আলাউদ্দিন, দ্বীন ইসলাম বেপারী, মোহাম্মদ সুজন খান, মোহাম্মদ পারভেজ বেপারী, মো. সোহেল ও নাইমা সুলতানা। কচুয়া উপজেলায় কোবায়েদ ও শামসুল আমান। মতলব দক্ষিণ উপজেলায় মিজানুর রহমান, আব্দুর রহমান গাজী, রাব্বি আলম ও সৈকত চন্দ্র দে।