কাশফুলে সেজেছে শীতলক্ষ্যা পাড়

প্রকাশ | ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
রাজধানী ঢাকার সবচেয়ে লাগোয়া উপজেলা গাজীপুরের কালীগঞ্জ। সারাবছর এখানে ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত থাকলেও বর্ষা আর শরতে প্রকৃতি যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। বর্ষাকালে স্বচ্ছ থৈথৈ পানিতে সারি সারি নৌকা আর শরতে সাদা কাশফুলের দোলা যে কারও মন ছুঁয়ে যাবে। শরৎ শেষ হতে আর কয়েকদিন বাকি, এর মধ্যে কাশফুলের শুভ্রতায় মুগ্ধতা খুঁজছেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার অনেকেই। বেলা গড়ালে লোক সমাগমে জমজমাট হয়ে উঠছে উপজেলা পরিষদের সামনে শীতলক্ষ্যা পাড়ের শ্মশান ঘাট এলাকা। কাশফুলের শুভ্রতার খুঁজতে সেখানে বসে কেউ গল্প করছেন। কেউ বা আবার কাশফুলের সঙ্গে তুলছেন সেলফি ও ছবি। কাশফুল দেখতে আসা কালীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী সুমন হোসেন সৈকত বলেন, শীতলক্ষ্যা পাড়ের শ্মশান ঘাটের সারি সারি সাদা কাশফুল, যত দূর চোখ যায় শুধু সাদা আর সাদা। পাখির চোখে দেখলে মনে হবে মাটিতে লুটে পড়েছে সাদা মেঘের ভেলা। বিকালের নীল আকাশে সাদা মেঘ আর শ্মশান ঘাটের সাদা কাশফুল যেন এখানে মিলেমিশে একাকার। কাশবনে ঘুরতে আসা মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, যান্ত্রিকতার ভিড়ে একটু প্রকৃতির ছোঁয়া ও সবুজঘেরা পরিবেশের পাশাপাশি প্রতিদিন এখানে আসছেন শত শত মানুষ। তবে চিন্তারও শেষ নেই ঘুরতে আসা পর্যটকদের, তাদের চিন্তা সেদিন হয়তো আর বেশি দূরে নয়, যেদিন হারিয়ে যাবে শ্মশান ঘাটের সারি সারি সাদা কাশফুল। শ্মশান ঘাটে শীতলক্ষ্যা নদীর স্বচ্ছ পানিতে মাছের পরিবর্তে ভেসে বেড়াবে ময়লার স্তূপ। আরেক দর্শনার্থী স্থানীয় আবুল খায়ের সিরামিক কারখানায় কর্মরত হিরণ সরকার বলেন, শীতলক্ষ্যা পাড়ের শ্মশান ঘাটের কাশফুলের বন প্রথম দেখায় যে কাউকে প্রেমে ফেলবে, কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ভেতর এত কাশফুল হয়তো দেখেনি কেউ আগে। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে কাশফুলের সাদার শুভ্রতায় যে কারও মন হারিয়ে যাবে অজানায়, এমনটাই মনে করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। আশরাফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়ভাবে বিনোদনের কোনো স্পট না থাকায় বর্ষার প্রকৃতিতে বিল-ঝিল, নদী-নালা ও শরৎকালে কাশবনের কাশফুলই ভরসা। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুলের মধ্যে কাশফুল অন্যতম। বাংলাদেশের সব নদ-নদীর তীরে প্রাকৃতিক জলাশয়ের ধারে বেশি কাশফুল জন্মে। কাশবন শুধু প্রকৃতিপ্রেমীদের মনে তৃপ্তি মেটায় না। এ কাশবন দিয়ে আগে মানুষ ঘর তৈরি করত এবং এখন পানের বরে ছাউনি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সেই সঙ্গে রান্নার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম ইমাম রাজী টুলু বলেন, দ্রম্নত নগরায়ণের ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার চিরায়িত রূপ। কালীগঞ্জেও দিন দিন বাড়ছে মানুষ, কমছে আবাদি-অনাবাদি জমি, তাই যেখানেই মানুষ প্রাকৃতিক পরিবেশ পাচ্ছে তাতেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে। তাছাড়া এলাকাটি পৌর শহরের কাছে এবং নিরাপদ জোন হওয়ায় দিন দিন লোক সমাগম বাড়ছে।