আত্রাই-নাটোর আঞ্চলিক সড়ক প্রশস্ত না হওয়ায় ঘটছে দুর্ঘটনা

প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

আত্রাই (নওগাঁ) ও লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি
লোহাগড়া বাজার সড়ক পানি-কাদায় একাকার জনদুর্ভোগ চরমে
আত্রাই-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়কের রাণীনগর থেকে আত্রাই হয়ে নাটোর পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্ত করা অতীব জরুরি বলে মনে করছেন সচেতন এলাকাবাসী। সড়কটি প্রশস্ত না হওয়ায় সাম্প্রতিক সময় এই সড়কে ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানিও ঘটছে অহরহ। গত আওয়ামী লীগ সরকারের মাঝামাঝি সময় এলাকাবাসীর যোগাযোগের উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক এই মহাসড়কটি নির্মাণ করা হয়। ফলে নওগাঁর রাণীনগর, আত্রাই, রাজশাহীর বাগমারা, নাটোরের সিংড়া, নলডাঙ্গাসহ বিস্তীর্ণ এলাকার জনসাধারণের যোগাযোগের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। এদিকে এই সড়কের নওগাঁ থেকে রাণীনগর পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক ৩৪ ফুট প্রশস্ত করা হলেও রাণীনগর থেকে নলডাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার সড়ক মাত্র ১৮ ফুট প্রশস্ত রয়েছে। আঞ্চলিক এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন বাস, ট্রাক, ঢাকাগামী কোচসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে থাকে। রাণীনগর থেকে নলডাঙ্গা পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্ত কম হওয়ায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনায় অনেকের প্রাণহানিও ঘটেছে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসীর দাবি, রাণীনগর থেকে নলডাঙ্গা পর্যন্ত নওগাঁ থেকে রাণীনগরের মতো প্রশস্ত করা হোক। এদিকে নলডাঙ্গা থেকে নাটোর পর্যন্ত এই সড়কটি যথেষ্ট আঁকাবাঁকা। নওগাঁ থেকে নলডাঙ্গা পর্যন্ত আঞ্চলিক এই মহাসড়কটি সোজা হলেও নলডাঙ্গা থেকে নাটোর পর্যন্ত মাত্র ১২ কিলোমিটার সড়কটি বিভিন্ন গ্রামের মধ্য দিয়ে আঁকাবাঁকা হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এলাকাবাসীর দাবি, নলডাঙ্গা থেকে নাটোর পর্যন্ত রেললাইনের পাশ দিয়ে এই সড়কটি সোজা করে নির্মাণ করা হোক। আত্রাই-নাটোর রুটের সিএনজি চালক পিন্টু বলেন, 'নলডাঙ্গা থেকে নাটোর পর্যন্ত সড়কটি আঁকাবাঁকা হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা যানবাহন চালাই। সেখানেও অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে।' নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল হক বলেন, নওগাঁ থেকে রাণীনগর পর্যন্ত একটি পৃথক প্রকল্প আর রাণীনগর থেকে নলডাঙ্গা পর্যন্ত আরেকটি প্রকল্প। এ ছাড়াও নলডাঙ্গা থেকে নাটোর পর্যন্ত সড়কটি রেললাইনের পাশ দিয়ে সোজা নির্মাণ করা প্রয়োজন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে সড়কটি প্রশস্ত করার প্রকল্প প্রস্তুত করা যাবে। এদিকে, লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি জানান, নড়াইলের লোহাগড়া বাজারের বিভিন্ন অলি-গলিসহ সড়কে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও বাজার দিয়ে চলাচলকারীরা। একটু বৃষ্টি হলেই কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায় বাজারের সড়কগুলো। পানি কাদার ভেতর দিয়ে বাজার করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এদিকে বাজারের ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও বাজার দিয়ে চলাচলকারী মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। লোহাগড়া পৌর শহর ও বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পৌর শহর ও বাজারের বিভিন্ন অলি-গলির রাস্তা পানিতে থৈ থৈ করছে। পানি বের হওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ কারণে ব্যবসায়ী, ক্রেতা ও বাজার দিয়ে চলাচলকারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। লোহাগড়া বাজারে হাজারেরও অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতি সপ্তাহের সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই বাজারে হাট বসে। কিন্তু বাজার বসে প্রতিদিন ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। সব মিলিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে এই বাজারে। এ ছাড়া লোহাগড়া বাজারে রয়েছে সোনালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ইউসিবি ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, কমার্স ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকের উপশাখা। লোহাগড়া বাজার থেকে রড বহন করে নিয়ে যাচ্ছিলেন ভ্যানচালক সাহেব আলী। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজারের ভেতরের সড়কে গর্তের পাশাপাশি কাদা-পানিতে একাকার তাই, ভ্যান চালাতে অনেক কষ্ট হয়। কেনাকাটা করতে এসে লোহাগড়ার জয়পুর ইউনিয়নের মরিচপাশা গ্রামের পিকুল আলম বলেন, লোহাগড়া বাজার একটি বড় বাজার। কিন্তু সামান্য বৃষ্টি হলে কাদা-পানিতে চলা যায় না। লোহাগড়া বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী মুনায়েম বলেন, বৃষ্টি নামলে বাজারের ভেতরের সড়কের চিত্র খুবই করুণ হয়ে যায়। হাঁটতে চলতে খুব অসুবিধা হয়। এ জন্য ব্যবসায়ীদের বিক্রিও কমে গেছে। লোহাগড়া পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিঠুন মৈত্র বলেন, বাজারের রাস্তা ও ড্রেনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বাজারসহ মোট চারটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দরপত্র আহ্বান করে দ্রম্নত কাজ করা হবে।