একদিকে বিদু্যতের ঘন ঘন লোডশেডিং অন্যদিকে চলছে সংস্কার ও মেরামতের কাজ। ফলে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির লংগদুর জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এদিকে তীব্র গরমের মধ্যে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদু্যৎয়ের লুকোচুরি খেলা এবং একবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে পরবর্তীতে সংযোগ না আসায় ক্ষুদ্ধ ও অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন উপজেলার বিদু্যৎ সেবাগ্রহীতারা।
গ্রাহকরা বলছেন ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে টিভি, ফ্রিজ, এসিসহ ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। দিনে ৩-৪ ঘণ্টাও বিদু্যৎ পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ তাদের।
তবে বিদু্যৎ বিভাগের দাবি চাহিদা মোতাবেক বিদু্যৎ সরবরাহ পাওয়ার পরও লাইন ও পুলের মেরামত-সংস্কার কাজ চলায় ১২-১৩ দিন ধরে বিদু্যৎ সংযোগে সমস্যা হচ্ছে।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ি পলস্নী বিদু্যৎতে জোনাল অফিসের দীঘিনালা ৩৩ কেবি কেন্দ্রের আওতায় ২টি ফিডারে বিভক্ত করা হয়। এর মধ্যে একটি মারিশ্যা বাঘাইছড়ি ও অন্যটি লংগদু উপকেন্দ্র। এ উপজেলায় বড় কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান না থাকলেও প্রায় ৬ হাজারের অধিক গ্রাহক রয়েছেন। এর মধ্যে আবাসিক গ্রাহক ৫ হাজার, বাণিজ্যিক গ্রাহক ৮শ' এবং কিছু দাতব্য গ্রাহক ও সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসবে নিরবচ্ছিন্ন বিদু্যৎ সরবরাহ করার জন্য মাত্র ৩ মেগাওয়াট বিদু্যৎ এর প্রয়োজন। যা তাদের সরবরাহে থাকে বলে জানিয়েছে লংগদু বিদু্যৎ উপকেন্দ্র। তবে জাতীয় গ্রিডে বিদু্যৎয়ের ঘাটতি রয়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলার তিনটিলা গ্রামের পলস্নী বিদু্যৎ গ্রাহক আমিনুল বলেন, 'বেশ কয়েকদিন ধরে আমাদের এলাকায় বিদু্যৎ থাকে না বললেই চলে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টায় ২-৩ ঘণ্টার মতো বিদু্যৎ পাওয়া যায়। যে কারণে আমরা ফ্রিজ, টিভি, এসিসহ ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী নিয়ে শঙ্কায় আছি।'
আরেক গ্রাহক তুষার চাকমা বলেন, 'আমরা যারা পুরুষ মানুষ, তারা হয়তো বাইরে ঘুরাফেরা করতে পারছি। কিন্তু ভোগান্তি পোহাচ্ছেন বৃদ্ধ, নারীসহ শিশুরা। তারা তো আর বাড়ি থেকে বের হতে পারেন না।'
লংগদু সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিক্রম চাকমা বলি বলেন, 'প্রতিদিন কি মেরামতের কাজ চলে লংগদু বিদু্যৎ সরবরাহ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪ ঘণ্টা বিদু্যৎ থাকেনা ঠিক মতো। এর প্রতিকার কবে হবে নাকি জনগণ ফুঁসে উঠলে সুতরাং সময় থাকতে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। অন্যথায় জনগণ দায়ী থাকবে না।'
লংগদু বিদু্যৎ উপকেন্দ্রের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাগর দেবনাথ জানান, উপজেলায় ৩ মেগাওয়াট বিদু্যতের চাহিদা রয়েছে। বিদু্যৎ প্রাপ্তির উপর নির্ভর করে লোডশেডিং দেওয়া হয়। তবে এখন লোডশেডিং নয়, লাইনের পুল ও তারের মেরামত ও সংস্কার কাজ চলমান থাকায় সংযোগে বিঘ্ন ঘটছে।