শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১

ফিড ব্যবসায়ীসহ ৩ জেলায় তিনজনকে হত্যা

বজ্রপাত ও পানিতে ডুবে আরও ৭ মৃতু্য
স্বদেশ ডেস্ক
  ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ফিড ব্যবসায়ীসহ ৩ জেলায় তিনজনকে হত্যা

কুপিয়ে, পিটিয়ে ও লাথির আঘাতে তিন জেলায় তিনজনকে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নরসিংদীর শিবপুর, টাঙ্গাইল ও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে এসব হত্যার ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে ব্রজপাত, পানিতে ডুবে এবং ট্রেনে কাটা পড়ে তিন জেলায় আর সাতজনের অপমৃতু্য হয়েছে। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট-

শিবপুর (নরসিংদী) প্রতিনিধি জানান, নরসিংদীর শিবপুরে ফিড ব্যবসায়ী দৌলত খানকে রাতের আঁধারে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে একদল সন্ত্রাসী। গত শনিবার রাত ১টায় উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের দত্তেরগাঁও মধ্যপাড়া গ্রামে এ হত্যার ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, সন্ত্রাসীরা চুরির ফাঁদ পেতে ট্রাকের ব্যাটারি চুরি করার পাঁয়তারা করছিল। দৌলত খান ঘর থেকে বের হলে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাকে উপর্যুপরি ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। পোল্টি ফার্মের কর্মচারীরা চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন আসার আগেই সন্ত্রাসীরা দৌলত খানের মৃতু্য নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতাল পাঠিয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিবপুর মডেল থানার ওসি আফজাল হোসেন।

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল জানান, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের আজগানা গ্রামে রোববার সকালে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে চাচা রিয়াজ হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ভাতিজা রুবেল মিয়ার বিরুদ্ধে।

স্থানীয়রা জানায়, আজগানা গ্রামের একটি রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য রিয়াজ হোসেনের কাছে তার ভাতিজা রুবেল মিয়া পাশের জায়গা চান। কিন্তু রিয়াজ হোসেন (৫০) অপারগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে চাচা-ভাতিজার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ভাতিজা রুবেল ক্ষিপ্ত হয়ে চাচা রিয়াজকে পিটিয়ে হত্যা করেন।

মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোশারফ হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী জানান, নীলফামারীর সৈয়দপুরে খড়খড়িয়া নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ মাদ্রাসা ছাত্র শাহিন আলমের (১৬) মরদেহ ৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। রোববার উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের বাড়ির পাশে চান্দিয়ার ডাঙ্গা ব্রিজের দেড় গজ দূরে ওই মরদেহ উদ্ধার হয়। মৃত শাহিন ওই ইউনিয়নের পোড়ারহাট তেলিপাড়ার আবু তালেবের ছেলে ও পোড়ারহাট সিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

প্রতিবেশী আজাহার আলী বলেন, শাহিন তিন বন্ধুকে নিয়ে সকালে বাড়ির পাশে খড়খড়িয়া নদীতে গোসল করতে যায়। এক পর্যায়ে ওই নদীতে ডুবে যায় তারা। এদের মধ্যে তিন বন্ধু পাড়ে উঠতে পারলেও নিখোঁজ হয় শাহিন।

এদিকে, নীলফামারী-সৈয়দপুর রেলপথের মিলনপলস্নী এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির মৃতু্য হয়েছে। রোববার সকালে ঘটনাটি ঘটে।

সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ওসি একেএম নুরুল ইসলাম জানান, সকালে ট্রেনে কাটা পড়া এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি জানান, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে বাসে ওঠা নিয়ে দ্বন্দ্বে জীবন ফকির (২০) নামে এক হকারের লাথির আঘাতে আমড়া বিক্রেতা কেসমত শেখ (৫০) নামে অপর হকারের মৃতু্য হয়েছে। মৃত কেসমত শেখ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের নুরু মন্ডলপাড়ার মৃত ভাষাণ শেখের ছেলে।

জানা যায়, কেসমত এবং জীবন দুজনই ফেরিতে হকারি করতেন। আমড়া বিক্রির জন্য বাসে ওঠার জেরে গত সোমবার বেলা দেড়টার দিকে দৌলতদিয়া চার নম্বর ফেরি ঘাটসংলগ্ন পন্টুনের সামনে আমড়া নিয়ে বাসে উঠতে যায়। এ সময় একই গ্রামের বাবু ফকিরের ছেলে জীবনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জীবন সজোরে তলপেটে লাথি মারলে কেসমত রাস্তায় পড়ে যান। উপস্থিত লোকজন তাকে প্রথমে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে পরে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার তার মৃতু্য হয়। গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তার করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

বিশ্বম্ভরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, বিশ্বম্ভরপুরে বজ্রপাতে এক কৃষক ও পানিতে ডুবে দুই শিশুসহ তিনজনের মৃতু্য হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে উপজেলা সদরের মুক্তি খলা গ্রামের মৃত ফজর আলীর ছেলে এমদাদুল হক (৫০) বজ্রপাতে মৃতু্যবরণ করেন। তিনি খরচার হাওড়ে বিলে কাটা দেওয়ার সময় এ দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে মারা যান।

একই দিন দুপুরে উপজেলা সদরের রাধানগর গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে ইউনুছ মিয়া (৮) শক্তিয়ারলা গ্রামের মনোয়ার হোসেন ময়নার ছেলে আরাফাত হাসান মেহেদী (৭) হাওড়ে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যায়।

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের দেখার হাওড়ে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে দুজনের মৃতু্য হয়েছে। রোববার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের পলিরচর গ্রামের পার্শ্ববর্তী দেখার হাওড়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- উপজেলা পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের পলিরচর গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে জলাল মিয়া (৩৫) ও একই গ্রামের নুরুল হক মিয়ার ছেলে জসিম উদ্দিন (২৫)।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে