বছর ঘুরে দরজায় কড়া নাড়ছে দুর্গাপূজা। চলছে শেষ মুহূর্তের কর্মযজ্ঞ ও প্রস্তুতি। এর মধ্যে বিভিন্ন স্থানে পূজা উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রস্তুতিমূলক সভা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, দুর্গাপূজার বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। ?বছর ঘুরে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে কলাপাড়ায় পূজা মন্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বেশিরভাগ জায়গায় প্রতিমা গড়া শেষ, চলছে রঙের কাজ উপজেলায় এ বছর ১০টি মন্ডপে পালিত হবে দুর্গা উৎসব। ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষে থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজাকে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মন্দির কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে আনসার ও পুলিশ সদস্যরা।
আগামী ৮ অক্টোবর মহাষষ্ঠীতে দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ১২ অক্টোবর দশমীতে বিসর্জন ও শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। এদিকে বছর ঘুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ এ উৎসবকে ঘিরে মন্ডপে মন্ডপে বেড়েছে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা। অপরদিকে পূজা মন্ডপ ঘিরে সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
প্রতিমা শিল্পী রিপন পাল বলেন, 'আমরা কুয়াকাটা শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের প্রতিমাগুলো নতুন করে রং ও তুলির আঁচড় দিয়ে সাজিয়ে তুলছি। আগে ৭০-৮০ হাজার টাকায় পুরো প্রতিমা তৈরি করা থেকে সাজানো পর্যন্ত খরচ হতো। এখন মালামালের দাম বৃদ্ধি, শিল্পীদের পারিশ্রমিক বাড়ার কারণে খরচ এখন প্রায় দ্বিগুণ। তবুও এ কাজ আমাদের করতেই হবে কারণ এটা আমাদের ধর্মীয় রীতিনীতি।'
সাতক্ষীরা থেকে কুয়াকাটা মন্দিরে সেবাহীত হিসেবে আশা মনোহর চন্দ্র মন্ডল বলেন, 'পঞ্জিকা মতে আগামী ৮ অক্টোবর শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। এ দিন হবে ষষ্ঠীপূজা। আর ১২ অক্টোবর শনিবার দশমীতে চোখের জলে দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা এ ছাড়া মিশ্রিপাড়া, মম্বি পাড়াসহ অন্য মন্ডপের কাজ শেষ পর্যায়।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লাগোয়া শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেন, 'হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এখন শুধু বাকি আনুষ্ঠানিকতা। আশা করি এবারের পূজা আনন্দ ও নিরাপদে উদযাপন করতে পারব।'
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রবিউল ইসলাম জানান, শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে এ উপজেলার প্রতিটি পূজামন্ডপে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শতভাগ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে, পুলিশ প্রশাসন সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন।
আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, আসন্ন দুর্গাপূজায় এবার আটঘরিয়া উপজেলায় ১৬ মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের এই ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা পালনের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার ইউএনও নাহারুল আসলামের সভাপতিত্বে পূজা উদযাপন কমিটির প্রস্তুতিমূলক মতবিনিমা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং মন্দির কমিটির যৌথ উদ্যোগে তদারকি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন ইউএনও, এসি ল্যান্ড, ওসি, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির, লক্ষ্ণীপুর ইউপি চেয়ারম্যান, বিএনপি সদস্য সচিব, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক, পলস্নীবিদু্যৎ এজিএম, ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা প্রমুখ। এ ছাড়া হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন ছাত্র ঐক্যপরিষদের উদ্যোগে দুর্গাপূজার স্বেচ্ছাসেবক মনিটরিং টিম ৮ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ৬ দিনব্যাপী প্রত্যেক মন্ডপে পর্যবেক্ষণ ও মন্দিরে পাহারার দায়িত্ব পালন করবে।
বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্যপরিষদ জেলা শাখার সভাপতি শুভ কুমার দাস ও সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার রায় স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, আটরিয়া উপজেলা দুর্গাপূজা শেষে মনিটরিং টিমে আছে বিজন শেন, প্রান্ত কর্মকার, সোভাসাহা, শুভ সরকার, শুভশীল, সৌরভ কুমার, আকাশ রায় ও অনিক রায়।
কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে রোববার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রস্তুতি সভা। ইউএনও মো. ওয়াহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ওসমান গণি, মডেল থানার ওসি আব্দুলস্নাহ আল মামুন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন খাঁন, সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ উপজেলা শাখার আমির মোজাম্মেল হক জোয়ারদার, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক বিপস্নব সাহা, সদস্য সচিব ধ্রম্নব রঞ্জন দাস। বক্তারা বলেন, উপজেলায় ৩৩টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে পৌর এলাকায় ১৪টি, বাকি ৬টি ইউনিয়নে ১৯টি।
মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি জানান, খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার উপজেলা সম্মেলন কক্ষে ইউএনও তাহমিনা আফরোজ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন এসি ল্যান্ড শাহীনা নাসরিন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুমেন চাকমা, থানার উপ-পরিদর্শক সঞ্জয় ঘোষ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হক এনাম, সনাতন নেতা সজল বরণ সেন, মিলন কান্তি দে, মানিকছড়ি কেন্দ্রীয় কালী মন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি টিটু পাল ও কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা নুরুল কবির প্রমুখ।
নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি জানান, শেরপুরের নকলায় রোববার সকাল সাড়ে ১১টার সময় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে এ প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসি ল্যান্ড ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও তামান্না হোমায়রার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন নকলা থানার নবাগত ওসি হাবিবুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুল হক দুলাল, উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা হরিদাসি রানী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের উপজেলা আহ্বায়ক দেবজিৎ পোদ্দার ঝুমুর, সদস্য সচিব অশীষ কুমার সাহা, বানেশ্বর্দী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত প্রমুখ। এবার নকলায় ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১৭টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
ভান্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি জানান, পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইউএনও ইয়াছিন আরাফাত রানা'র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ক্যাপ্টেন মোস্তাফিজুর রহমান। বক্তব্য রাখেন এসি ল্যান্ড উজ্জ্বল হালদার, ওসি জিয়াউল আহসান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম উজ্জ্বল, বিএনপি'র সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল হাই হাওলাদার, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনির হোসেন আকন, পৌর আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান হাওলাদার, জামায়াতে ইসলামীর মাওলানা আমির হোসাইন প্রমুখ। উপজেলায় এবার ৪৭টি মন্ডপে দুর্গাপূজার উৎসব পালন করা হবে।