গাংনীতে বৃষ্টির অজুহাতে সবজির দাম আকাশছোঁয়া

ফুলকপি বাঁধাকপি আর উচ্ছের সেঞ্চুরী মরিচের ডবল সেঞ্চুরী

প্রকাশ | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী (মেহেরপুর)
মেহেরপুরের গাংনীতে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে তাপমাত্রার পারদ কমে গিয়ে জনজীবনে স্বস্তি ফিরলেও বৃষ্টির অজুহাতে সবজির দাম বৃদ্ধিতে অস্বস্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। চার দিনের ব্যবধানে বেগুন, পটোল, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসার দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। আর তাতেই পকেট কাটা পড়ছে সাধারণ ক্রেতাদের। ক্রেতাদের অভিযোগ, প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং না থাকায় ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া। প্রশাসনিক তদারকির অভাবে সিন্ডিকেট করে তাদের ইচ্ছামতো বাজারদর নির্ধারণ করে থাকেন। যার প্রভাব পড়ে বাজারদরে। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৈরী আবহাওয়ায় চাষিদের উৎপাদন কমে গেছে। তাই কৃষকপর্যায়ে দাম বেড়েছে। এর সঙ্গে পরিবহণ ও আড়ত খরচ যোগ করেই খুচরা বিক্রি করতে হয়। তবে কৃষকরা বলছেন অন্যকথা। তাদের মতে, বৃষ্টির কারণে সবজি সংগ্রহ কমে গেছে এটা ঠিক। তবে আড়তের চেয়ে দ্বিগুণ দাম বৃদ্ধির কথা নয়। শুক্রবার বাণিজ্যিক শহর বামন্দী সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেগুনের বর্তমান বাজার চলছে ৮০ টাকা করে, যা তিন দিন আগে ছিল ৩৫ টাকা করে, শসা চলছে ৮০ টাকা কেজি দরে, যা পূর্বে ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা করে, ফুলকপি ও বাঁধাকপি চলছে ১২০ টাকা করে, যা পূর্বে ছিল ৫০ টাকা করে, এক পিস লাউ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে, যা পূর্বে ছিল ৩০ টাকা করে, আর উচ্ছে চলছে ১২০ টাকা করে, যা পূর্বে ছিল ৬০ টাকা করে। প্রতি কেজি পটোল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা করে, যা তিন দিন পূর্বে ছিল ৩০ টাকা। ঝিঙে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায় যা পূর্বে ছিল ৪০ টাকা করে। ঢঁ্যাড়স ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে যা ছিল ৩৫ টাকা করে। সবজি চাষিরা জানান, মাঠপর্যায়ে সবজি সংগ্রহ একটু কম হলেও আড়তে বিক্রি হচ্ছে কম দামে। শুক্রবার আড়তে বেগুন প্রতি কেজি ২৩ থেকে ২৫ টাকা, শসা ৪০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫৫ টাকা, এক পিস লাউ ৩০ টাকা আর উচ্ছে বিক্রি করছে ৬০ টাকা, প্রতি কেজি পটোল ২৫ টাকা, ঝিঙে প্রতি কেজি ২৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। অথচ বাজারে কয়েক হাত বদল হয়ে দাম বেড়েছে দুই-তিনগুণ। সবজি ক্রেতা ইব্রাহিম জানান, বাজারে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে পালস্না দিয়ে বেড়েছে সবজির দাম। বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ার ধোঁয়া তুলে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়েছে আকাশছোঁয়া। যে টাকা পকেটে নিয়ে বাজারে আসা হয়েছে তা দিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় একেবারই কম সবজি কিনতে হবে। স্কুলশিক্ষক পলাশ আহমেদ জানান, শুক্রবার ছুটির দিনে সবাই বাজার করতে আসে। এ সুযোগটি বিক্রেতারা কাজে লাগান। তার ওপর বৃষ্টির অজুহাত। প্রত্যেকটি সবজিতে দুই-এক টাকা বেশি হলে ক্রেতাদের তেমন কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ফলে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে ক্রেতাদের এভাবে ভুগতে হবে। সবজি বিক্রেতা জাফর আলী জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজি আমদানি কমে গেছে। যার ফলে চাহিদার বিপরীতে আমদানি কমে যাওয়ায় বেড়েছে সবজির দাম। এমন আবহাওয়া চলতে থাকলে সবজির দাম আরও বাড়বে। একই কথা জানালেন সবজি বিক্রেতা মখলেচ। তিনি জানান, বৈরী আবহাওয়া সেই সঙ্গে ক্ষেতে জলাবদ্ধতার কারণে বাজারে অল্পসংখ্যক সবজি আমদানি হচ্ছে। যার ফলে দাম বেড়েছে। মেহেরপুর জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সজল আহমেদ জানান, ব্যবসায়ীরা যদি সিন্ডিকেট করে বাজার পরিস্থিতি অস্থির করার চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।