বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যুবক জুয়েল রানাকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান তার অসহায় পিতা-মাতা। আন্দোলনের শেষ দিনে গাজীপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন তিনি।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শালমারা ইউনিয়নের শাখাহাতী গ্রামের দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান জুয়েল রানা। পিতা-মাতার একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। পেশায় ছিলেন গার্মেন্টস কর্মী। তার উপার্জনেই চলত দরিদ্র কৃষক পরিবারটি। মা, বাবা, স্ত্রী এবং অবুঝ দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে ছিল তাদের সংসার। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে তার অংশগ্রহণ ছিল প্রশংসনীয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন চিরপ্রতিবাদী যুবক জুয়েল। আন্দোলনের শেষ দিনে হাসিনা সরকারের পতনের খবরে আনন্দ মিছিল করতে গিয়ে গাজীপুরে আনসার একাডেমির সামনে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। সে সময় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান বন্ধুরা। হাসপাতালগুলোতে আহতদের অনেক ভিড় থাকায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃতু্য হয়। একসময় নিজে রক্ত দিয়ে বাঁচিয়েছেন অনেক মানুষের জীবন। কিন্তু সেই রক্তের অভাবেই তার মৃতু্য হয়। পরিবারের উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা-মা। জুয়েলের বিষয়ে জানতে চাইলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা।
কৃষক বাবাও অনেকটাই বাকরুদ্ধ। তিনি প্রতিদিনই ছেলের কবরে যান এবং ছেলের কবরের পরিচর্যা করেন। তবে তিনি ছেলে হত্যার উপযুক্ত বিচার চান।
সচেতন মানুষের দাবি- জুয়েলকে আর কখনও ফিরে পাবে না তার বাবা-মা। তবে এই হত্যার উপযুক্ত বিচার ও পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক এটাই সবার প্রত্যাশা।