বগুড়ার নন্দীগ্রামে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে আমনের সবুজ সমারোহে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। যেদিকেই চোখ যায় শুধুই সবুজ আর সবুজ। আর এ সবুজ ধানের পাতায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। আর ক'দিন পরেই সোনালি ধানের শীষে ঝলমল করবে মাঠের পরে মাঠ। রাশি রাশি সোনালি ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য গোলা এবং মুখে ফুটে উঠবে হাসির ঝিলিক।
কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথাসময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে আমনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে নন্দীগ্রাম উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় সর্বমোট ১৯ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬১ হাজার ৫শ' মেট্রিক টন। আমনে এবার এই উপজেলার দেড় হাজারেরও অধিক কৃষককে প্রণোদনাস্বরূপ সার ও ধান বীজ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, নন্দীগ্রাম সদরসহ পাঁচটি ইউনিয়নে আমন ধানের মাঠে সবুজের সমারোহ। ধানের প্রতিটি খেতে শীষ উঁকি দিচ্ছে। খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। উপজেলার রিধইল গ্রামের কৃষক আবু বক্করের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, 'আমি আট বিঘা জমিতে এবার আমন চাষ করেছি। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ খুবই কম, যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দেয় তাহলে গত বছরের চেয়ে এবছর আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।'
সিংড়া খালাস গ্রামের কৃষক আরিফুল ইসলাম বলেন, 'বুক ভরা আশা নিয়ে দিনভর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। যদিও এবার পোকামাকড়ের আক্রমণ কম, আমন ধান গত বছরের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। তবে আশা করা যাচ্ছে যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে তবে এবার আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।'
বেশকিছু কৃষকদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, ভালোভাবে আমন ফসল ঘরে তুলতে পারলে তাদের সারা বছরের চাহিদা পূরণ হয়। এই অঞ্চলের কৃষকরা বিপুল পরিমাণ ফসল উৎপাদন করে অত্র অঞ্চলের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করেও ৭০-৭৫ ভাগ ধান দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে থাকে।
১নং বুড়ইল ইউনিয়ন বস্নকের দ্বায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম, ২নং সদরের শাহরুল ইসলাম, ৩নং নাজমুল হোসেন, ৪নং সুজন কুমার ৫নং এর শাহাদত, সোহেল, ছালামের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, 'আমরা প্রতিদিন মাঠে যাচ্ছি এবং আমাদের কৃষক ভাইদের কীটনাশক প্রয়োগসহ সব ধরনের পরামর্শ পদান করে আসছি।'
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার গাজীউল বলেন, আমন ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠপর্যায়ে কৃষক ভাইদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদান করে আসছি। এবং কৃষকরা নিয়মিত কৃষি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং আমাদের পরামর্শমত ধান চাষ করেছে, তিনি আরও বলেন, রোগ-বালাই পোকামাকড় তেমন একটা নেই। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমন ধানের বাম্পার ফলন হবে এতে কৃষকরা অনেকটা লাভবান হবে।