যশোরের আলোচিত টিএসআই রফিক দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
যশোরের বহুল আলোচিত সাবেক টাউন ইন্সপেক্টর (টিএসআই) রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ঝরনা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে এবার মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও সহায়তার অভিযোগে মঙ্গলবার বিকেল দুদক যশোর সমন্বিত কার্যালয়ে উপ-সহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৩০ লাখ ৯ হাজার ৩৫২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক যশোর সমন্বিত কার্যালয়ে উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আল-আমিন। এর আগে গত ২১ আগস্ট আলোচিত রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ঝরনা ইয়াসমিনের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। তাদের দুইজনের জ্ঞাত আয়ের বাইরে ৫ কোটি ৯৪ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৫ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই নির্দেশ দেন। মঙ্গলবারের মামলার বিবরণে জানা যায়, 'যশোরের বহুল আলোচিত টিএসআই রফিকুল ইসলাম ১৯৮৭ সালে পুলিশে যোগদান করেন। এরপর ২০২৩ সালের ১৬ মে পর্যন্ত তিনি যশোরসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত ছিলেন। এসময়কালে তিনি প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ উপায়ে আয় করেন। যা দিয়ে নিজের ও স্ত্রীর নামে যশোর, খুলনা, গোপালগঞ্জ, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্পদ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ গড়ে তোলেন। বিভিন্ন সময় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক টিএসআই রফিক ও তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয়। তাদের সম্পদের বিবরণী পাওয়ার পর অনুসন্ধান শুরু করে দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দুদক তাদের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৩০ লাখ ৯ হাজার ৩৫২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রমাণ পেয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার শুকতাইল মৌজাতে ১৮৩ দশমিক ০৪ শতক। একই উপজেলার পাইকেরডাঙ্গা মৌজায় ৬৭ শতক। রফিকের স্ত্রী ঝরনা ইয়াসমিনের গোপালগঞ্জ পৌরসভার খাটরা মৌজাতে ৭ শতকের মধ্যে ২ দশমিক ৩৩ শতক। বাকি অবশিষ্ট তার শ্যালিকার নামে ক্রয় করা। ঢাকা সিটি করপোরেশন সেনপাড়া পার্বত্য মৌজায় ৮ দশমিক ২৪ কাঠার ৯০ দশমিক ৬ অযুতাংশ। জমির মূল্য ১১ লাখ ১২ হাজার ৫৭১ টাকা। ফ্ল্যাট নির্মাণ ৫০ লাখ টাকা। ঢাকা জেলার বিলামালিয়া মৌজাতে ৬ দশমিক ৫০ শতক। যার মূল্য ৮৮ হাজার টাকা। খুলনা সিটি করপোরেশন মুজগুন্নি আবাসিক মৌজায় ০ দশমিক ০৬৬১ একর। যার মূল্য ১০ হাজার টাকা। খুলনা ফুলতলায় ৯ নম্বর মশিয়ালিতে ৭ শতক। যার মূল্য ৭৩ হাজার ৫০০ টাকা। রাজশাহী সিটি করপোরেশন হড়গ্রাম মৌজায় ০ দশমিক ০০৩০৮ একর, মূল্য ১০ লাখ টাকা। যশোর পাগলাহ মৌজায় ১৯১ শতক জমির মূল্য ১১ লাখ ৮৭ হাজার ২০০ টাকা। খুলনার ফুলতলা মশিয়ালি মৌজায় এক একর ১/২ ৫০ শতক স্ত্রীর নামে। বাকি অংশ শ্যালিকার নামে ক্রয় করা। যশোর সদরের পাগলাদাহ মৌজায় ৮৫ শতক। যার জমির মূল্য ৪০ লাখ ১১ হাজার ৭০০ টাকা। স্থাপনার মূল্য ৮৯ লাখ ১৫ হাজার ২২৩ টাকা। যশোর পৌরসভার বারান্দিপাড়া মৌজায় ১ দশমিক ০৩৮ শতক জমির মূল্য ১৩ লাখ ৪৫ হাজার ৯০০ টাকা। স্থাপনার মূল্য ৯২ লাখ ০৩ হাজার ৬৪৭ টাকা। এরপর দুদক সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেনের আবেদনে আদালত গত ২১ আগস্ট রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ঝরনা ইয়াসমিনের অবৈধ সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দেন। সবশেষ দুদক প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন নিয়ে এই মামলা দুটি করা হয়েছে।