দাকোপে অবৈধ বালু উত্তোলনে চলছে প্রতিযোগিতা
প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি
খুলনার দাকোপে আত্মঘাতি স্যালো বা ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে চলছে প্রতিযোগিতা। স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি বহাল তবিয়তে বিভিন্ন নদী ও খাল থেকে মাটি বালু উত্তোলন করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে আসছে। পাশাপাশি আবার চলছে কৃষি জমি ভরাট করে জমজমাট পোলাটিং ব্যবসা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন যাবৎ দেদারচ্ছে এ ব্যবসা চালিয়ে আসলেও যেন দেখার কেউ নেই।
সরেজমিনে ঘুরে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় সরকারিভাবে কোনো বালুমহাল নেই। তারপরও থেমে নেই অবৈধ বালি উত্তোলন। স্থানীয় কাজীবাছা, পশুর, চুনকুড়ি, ভদ্রা, সুতারখালী, ঢাকী ও শিবসা নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো এ মাটি ও বালু উত্তোলন করছে। এ ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদা বেড়িবাঁধের ভেতরে বিভিন্ন খাল থেকে আত্মঘাতি স্যালো মেশিন দিয়েও। ফলে কৃষি জমির পরিমাণও দিন দিন কমে আসছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। অধিক লাভের আশায় সদ্য গজিয়ে ওঠা কয়েকজন তথাকথিত নেতা বালু উত্তোলন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শুরু করেছে রমরমা ব্যবসা। প্রতিদিন লাখ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করে ধানের জমি ভরাট, সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনার কাজে প্রতি ফুট দুই থেকে আট টাকা দরে বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই ব্যবসায়ীরা। কোনো কোনো স্থানে আবার রাস্তার ওপর ইট, বালু ও খোয়া দিয়ে পাইপ বসিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বালু উত্তোলনের ফলে যানবাহন চলাচলে বিঘ্নসহ দুর্ঘটনাও ঘটছে। এমনকি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ছিদ্র করেও পাইপ ঢুকিয়ে দেদারচ্ছে এ ব্যবসা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। এদিকে কথিত ঠিকাদার ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধিরা ওই নিম্নমানের মাটি বালু দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনার কাজ।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) খুলনা বিভাগীয় নেটওয়ার্ক কমিটি ও জাতীয় কৃষক সমিতির খুলনা জেলা কমিটির সভাপতি এবং কেন্দ্র কমিটির সদস্য প্রাক্তন অধ্যাপক গৌরাঙ্গ প্রসাদ রায় জানান, সুন্দরবনের কোলঘেঁষা ছোট এই উপজেলা ৩টি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত এবং এক প্রকার দ্বীপগুলো বালুর ওপর ভেসে আছে। তারপর আবার প্রতিনিয়ত নদী ভাঙনে বাড়িঘর, ফসলি জমিসহ বেড়িবাঁধ বিলীন হচ্ছে। এছাড়া গ্রামীন কার্পেটিং রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থাপনারও ক্ষতি হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্যও মারাত্মক হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়ছে। এভাবে যত্রতত্র বালু উত্তোলন করে ব্যবসা চালিয়ে আসলে অচিরেই এই উপজেলার চরম বিপর্যয় ঘটতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমত হোসেন বলেন, কোথায় কোথায় বালি উত্তোলন হচ্ছে এগুলো খোঁজখবর নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।