সৈয়দপুরে তীব্র গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত, সেচের অভাবে চাষে বিড়ম্বনা

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
নীলফামারীর সৈয়দপুরে তীব্র তাপ ও ভ্যাপসা গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গরমে অনেকেই জ্বর, সর্দি, ডায়ারিয়া, আমাশয়সহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। যার ফলে প্রতিদিন স্থানীয় হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ডাক্তারদের চেম্বারে রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। গরমে তেষ্টা মেটাতে ফুটপাতের সরবতের দোকানগুলোতেও কর্মজীবী মানুষজন ভিড় জমাচ্ছেন। দিন-মজুরসহ, রিকশা-ভ্যান চালকরা একটু গাছের ছায়া বা কোনো জায়গায় ছায়ার দেখা পেলেই সেখানে জিরিয়ে নিচ্ছেন। অনেকেই তীব্র তাপ ও ভ্যাপসা গরমে কাজ করতে না পেরে বেকার হয়ে থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপদে পড়ে রয়েছেন। সৈয়দপুর বিমানবন্দরের আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন ধরে সৈয়দপুরে ৩৮-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। কথা হলে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশাদ হোসেন জানান, তাপ ও গরমে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। যার ফলে হাসপাতালে আগত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ সময় তিনি পরামর্শ হিসেবে বলেন, তীব্র তাপ ও গরমে বাইরে বের হওয়া যাবে না। বেশি করে পানি খেতে হবে। প্রয়োজনে কাজে বেরুলেও ছাতা ও পানি সঙ্গে রাখতে হবে। এদিকে মড়ার উপর খড়ার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বিদু্যতের লোডশেডিং। বাড়িতে, অফিস, স্কুল-কলেজ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষজনের হাঁসফাঁস আবস্থা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে কৃষকরা আমন ধান লাগানো জমিতে সেচ দিতেও বিড়ম্বনায় পড়েছেন। উপজেলার ৮ হাজার ১১৪ হেক্টরের বেশি জমিতে লাগানো উফসি, হাইব্রিড ও লোকাল আমন ধানের আবাদের উপরও এই তীব্র তাপ ও গরমের প্রভাব পড়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক কৃষক পানির অভাবে ধানে চিটা পড়ার আশংকা করছেন। সেইসঙ্গে অনেক কৃষক আমন আবাদের এবারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না বলেও আশংকা প্রকাশ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার ধীমান ভুষণ জানান, এবার উপজেলায় ৮ হাজার ১১৪ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরমধ্যে উফসি জাতের ৭ হাজার ৩২৪ হেক্টর জমিতে, হাইব্রিড ৯০৪ হেক্টর জমিতে ও বাকি জমিতে লোকাল ধানের আবাদ হচ্ছে। তীব্র তাপ ও লোডশেডিংয়ের কারণে জমিতে সেচ দিতে না পারায় জমি ফেঁটে যাওয়াসহ ধানে চিটা পড়ার বিষয়ে বলেন, এখনো পানির স্তর ঠিক থাকায় ধানের আবাদে কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তাছাড়া দুই-একদিনে বৃষ্টি নামবে তখন যেটুকু ক্ষতি হয়েছে সেটা পূরণ হয়ে যাবে।