ফরিদগঞ্জে ফসলের মাঠে পানি, তাই বাড়ির উঠানে আমনের বীজতলা

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
গত অর্ধশত বছর ধরে ধান চাষ করছেন। বৃষ্টিতে মাঝে মধ্যে ক্ষতির মুখে পড়লেও এবারের মতো বৃষ্টি কখনো দেখেননি। টানা বর্ষণের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় প্রায় এক মাস পার হলেও এখনো পানির নীচে ফসলের মাঠ। ফলে দুই-তিন বার বীজ বুনলেও টানা বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতায় চারা তৈরি করতে পারেননি চাষিরা। মৌসুমও শেষের পথে। বাধ্য হয়ে বাড়ির উঠোনেই আমনের বীজতলা তৈরি করেছেন দুই ভাই মুখলেছ খলিফা এবং শফিক খলিফা। ঘটনাটি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের চররামপুর গ্রামের। দুই ভাই মিলে নিজেদের বাড়ির উঠানেই ৩৪ কেজি বীজ ধান দিয়ে বীজতলা তৈর করেছেন। কৃষক শফিক খলিফা বলেন, 'এ বছর তিনবার বীজ ফেলেছি কিন্তু পানিতে পচে গেছে। বাধ্য হয়ে বাচ্চাদের খেলার উঠান কুপিয়েই বীজতলা তৈরি করেছি।' আরেক সহোদর মুখলেছ খলিফা বলেন, 'তিনবার বীজ নষ্টের পর আবারো দুই ভাই মিলে ৩৪ কেজি বীজধান ক্রয় করে বাড়ির উঠানে বপন করেছি। সরকার কিংবা কোনো সংগঠনই আমাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি।' রিয়াদ খলিফা নামে আরও এক কৃষক বলেন, 'আমরা তিন-চার বার বীজবপন করে বন্যার কারণে মার খেয়েছি। নিরুপায় হয়ে অবশেষে বাড়ির উঠোনে বীজতলা করেছি। দূর থেকে পানি টেনে প্রতিদিন সেচ দিতে হয়। কৃষি অফিসের কোনো সহযোগিতা কিংবা পরামর্শ আমরা পাইনি।' আবুল বাশার নামের অপর এক কৃষক বলেন, 'আমার ৭২ বছর জীবনে কখনো বাড়ির উঠোনে বীজবপন করে চারা উৎপাদন করতে দেখিনি। এ বছর পানিতে সব তলিয়ে গেছে। পানি কমলে মাঠে বপন করা হবে। এখন সময়ও শেষ। তারপরও আমরা আশা ভরসা করে চারা উৎপাদন করছি।' উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কলেস্নাল কিশোর সরকার বলেন, 'এ বছর আমাদের আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ৩৭৩ হেক্টর। জলাবদ্ধতায় কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়ে আমরা শঙ্কিত। আমন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখতে আমরা কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করে আসছি। কোনো কৃষক সহযোগিতা বঞ্চিত হলে আমরা তথ্য সংগ্রহ করে তাদের পাশে দাঁড়াব।'