বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে অসহায় শহীদ আশরাফুলস্নার পরিবার

প্রকাশ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

দেলদুয়ার (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ভালো নেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আশরাফুলস্নার পরিবার। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পরিবারটি খুবই অসহায় হয়ে পড়ে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের বারপাখিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের হারুন উর রশিদ ও আছিয়া খাতুনের একমাত্র ছেলে আহনাফ আবির আশরাফুলস্নাহ। নিহত আশরাফুলস্নার দাদার বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার বাসুদিয়া গ্রামে। প্রায় ৩০ বছর ধরে তারা টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার বারপাখিয়া গ্রামে বসবাস করছেন। বাবা হারুন উর রশিদের সংসারের প্রতি উদাসিনতা থাকার কারণে আশরাফুলস্নাহ অল্প বয়স থেকেই সংসারের হাল ধরেন। সে কারণে আশরাফুলস্নাহকে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে হয়। তার পড়ালেখার প্রতি তীব্র ইচ্ছা থাকায় সংসার পরিচালনার পাশাপাশি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যায়। জানা গেছে, ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আহনাফ আবির আশরাফুলস্নাহ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে সচেষ্ট ছিলেন। সে কারণেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আনন্দোলনে যোগ দেন। সেখানে ৫ আগস্ট বিকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আশরাফুলস্নাহ। সেদিন আশরাফুলস্নাহর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্রটি রক্তে রঞ্জিত হয়। সেই পরিচয়পত্রটি তার মায়ের কাছে এখন স্মৃতি। রক্তমাখা পরিচয়পত্রটি হাতে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন তার ছেলে বেঁচে আছেন। মা-বোনের কান্নায় যেন আকাশ বাতাস ভারী হয়ে যায়। আশরাফুলস্না ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি নামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। চাকরি আর পড়াশোনা নিয়ে দিন কাটছিল তার। ঠিক সে সময় শুরু হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আনন্দোলন। আর শুরু থেকেই আনন্দোলনে যোগ দেন আশরাফুলস্নাহ। গত ৫ আগস্ট যখন বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতা বিজয় উলস্নাস করছিল ঠিক সেই সময় সাভার থানার বাইপাইল এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে পরিবারটি। নিহত আশরাফুলস্নাহর মা আছিয়া খাতুন ছেলের রক্তেমাখা পরিচয়পত্র হাতে নিয়ে বলেন, তার একমাত্র ছেলে আশরাফুলস্নাহ ছাত্র আনন্দোলনে শহীদ হয়েছে। ছেলের স্মৃতি ভুলতে পারছেন না। আশরাফুলস্নাহর রক্তমাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্রটি দেখে একমাত্র ছেলের স্মৃতিচারণ করেন। যারা তার একমাত্র ছেলেকে হত্যা করেছে তাদের দ্রম্নত বিচারের আওতায় আনার দাবি করেন তিনি।