হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা বাগানে ৪ সপ্তাহ ধরে ১১শ' শ্রমিকের নিয়মিত দৈনিক হাজিরা ও রেশন বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। সোমবার সকালে কারখানার সামনে মানববন্ধন করে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন তারা। তাদের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ না করা পর্যন্ত বাগানের কাজে যোগ দেবেন না বলেও ঘোষণা দেন শ্রমিকরা।
কর্মবিরতির ঘোষণার পর থেকে বাগানের কারখানা বন্ধ রয়েছে। চা বাগানে কোনো চা পাতা সংগ্রহ বা প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে না। বাগানের শ্রমিকরা জানান, চা বাগানের শ্রমিকরা দৈনিক ১৭০ টাকা মজুরিতে কাজ করে থাকেন। প্রতি সপ্তাহে তাদের মজুরির টাকা ও রেশন হিসেবে আটা-চাল দেওয়া হয়। ওই চাল দিয়ে সংসার চালিয়ে থাকেন। কিন্তু গত ৪ সপ্তাহ ধরে তেলিয়াপাড়া চা বাগানে শ্রমিকদের কোনো বেতন ও রেশন দেওয়া হচ্ছে না। এখন শ্রমিক পরিবারগুলো অনাহারে অর্ধাহারে দিন পাড় করছে। বাগানের শ্রমিকদের বিকল্প আয়ের কোনো উৎস নেই। বাগানের কাজের মধ্যেই তাদের জীবিকা চলে।
তেলিয়াপাড়া চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক লালন পাহান জানান, শ্রমিকরা রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে চা বাগানে কায়িক পরিশ্রম করে থাকেন শুধু দুমুঠো ভাতের আশায়। কিন্তু বাগান কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে গত ৪ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের পাওনা দিতে পারছেন না। এখন তারা কি খেয়ে কাজে যাবেন। সামান্য মজুরিতে তাদের সংসার কোনোরকম চলে যেত। কিন্তু এখন সবকিছু বন্ধ।
বাগানের সভাপতি খোকন পান তাঁতি বলেন, কর্তৃপক্ষ বাগান চালাতে ব্যর্থ হচ্ছে। কারণ বাগান ধ্বংস হলে শ্রমিকরা চিরতরে ক্ষতির মধ্যে পড়বে। সব জেনেও তাদের পাওনা বুঝে পেতে লাগাতার কর্মবিরতি দিতে বাধ্য হয়েছেন। পাওনা পরিশোধ করা হলে সাধারণ শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবেন। এর আগে কাজে যোগ দেবেন না।
বাগানের ম্যানেজার রাহেল রানা বলেন, 'কর্মবিরতি না করতে তাদের অনুরোধ করেছি। কিন্তু তাদের মজুরি ও রেশন না পেয়ে তারা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ টাকা দিলেই শ্রমিকদের পরিশোধ করা হবে। কাজ বন্ধ রাখায় বাগানে আরও লোকসান হবে।'