হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা, হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ৫ মামলায় ১১ জন সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে। এসব সাংবাদিক ১০টি স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় কর্মরত।
মামলায় আনিত অভিযোগের সঙ্গে সাংবাদিকরা জড়িত না থাকার কথা জানানোয় এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আর অপরাধে জড়িত না থাকলে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি সাংবাদিক নেতাদের।
আসামি হওয়া সাংবাদিকদের মধ্যে হবিগঞ্জ সদর, শায়েস্তাগঞ্জ ও চুনারুঘাট উপজেলায় ২ জন করে ৬ জন; মাধবপুরে ৪ জন ও বানিয়াচং উপজেলায় ১ জন। তারা দৈনিক ভোরের কাগজ, দৈনিক সমকাল, দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক জনকণ্ঠ, দৈনিক সংবাদ, মাছরাঙা টেলিভিশন, বাংলা টিভি, দৈনিক প্রতিদিনের বাণী, দৈনিক হবিগঞ্জের জননীসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত।
গত ২ আগস্ট জেলা সদরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মোস্তাক আহমেদ নামে এক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় গত ২০ আগস্ট ১১১ জনের নাম উলেস্নখ ও দেড়শ' অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা হয়। এতে হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি ও ভোরের কাগজের প্রতিনিধি শফিকুল আলম চৌধুরীকে ৮১ নম্বর ক্রমিকে ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রতিনিধি চৌধুরী মাসুদ আলী ফরহাদকে ৭৬নং ক্রমিকের আসামি করা হয়। এ ঘটনায় হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেখানে গণমাধ্যমকর্মীদের কয়েকজন দাবি করেন- এই দুই সাংবাদিক জানিয়েছেন তারা হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত না; উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আসামি করা হয়েছে।
এ ছাড়া শায়েস্তাগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে করা মামলায় দৈনিক যুগান্তরের কামরুজ্জামান আল রিয়াদ ও দৈনিক প্রতিদিনের বাণীর সাখাওয়াত হোসেন টিটুকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া চুনারুঘাটের মামলায় বাংলাটিভির মোতাব্বির হোসেন কাজল ও প্রতিদিনের বাণীর মোহাম্মদ আলী; বানিয়াচংয়ে দৈনিক সমকালের রায়হান উদ্দিন সুমন এবং মাধবপুরে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে করা মামলায় আমাদের সময়ের মোহাম্মদ অলিদ মিয়া, দৈনিক সংবাদের এরশাদ আলী, দৈনিক জনকণ্ঠের শংকর পাল চৌধুরী ও দৈনিক জননীর নাহিদ মিয়াকে আসামি করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের কেউ কেউ দাবি করছেন- সদ্য ক্ষমতাচু্যত আওয়ামী লীগের অনেক লোক হামলা, ভাঙচুরে অংশ নিয়েও আসামি হননি। অথচ হয়রানিমূলকভাবে এসব মামলায় তাদের নাম যোগ করা হয়েছে।
পৃথক মামলার আসামি সাংবাদিক কামরুজ্জামান আল রিয়াদ, সাখাওয়াত হোসেন টিটু ও মোতাব্বির হোসেন কাজলের সঙ্গে যায়যায়দিনের কথা হয়। তাদের দাবি- তারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। কিছু লোক অন্যায়ভাবে মামলায় তাদের নাম ঢুকিয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি রাসেল চৌধুরী যায়যায়দিনকে বলেন, 'সাংবাদিকরা যদি এসব অভিযোগের সঙ্গে জড়িত না থাকেন তাহলে মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া উচিত।'