টাঙ্গাইলে এনজিওকর্মীকে পিটিয়ে হত্যা, পাঁচ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সোসাল অ্যাডভান্সমেন্ট থ্রু ইউনিটি (সেতু) সহকারী হিসাবরক্ষক মো. হাসান আলী প্রামাণিককে পিটিয়ে সেতু টাওয়ারের ৭ম তলা থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগে সেতু'র পাঁচ কর্মকর্তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে। নিহত হাসান আলী প্রামাণিক সিরাজগঞ্জ জেলার উলস্নাপাড়া উপজেলার পুঠিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ প্রমাণিকের ছেলে। গ্রেপ্তাররা হচ্ছেন- ওই এনজিও'র নির্বাহী পরিচালক মির্জা সাহাদত হোসেনের ছেলে উপ-পরিচালক (মানব সম্পদ) মির্জা সাকিব হোসেন, উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম, সহকারী কর্মকর্তা (আইন) শরিফুল ইসলাম, স্টাফ অফিসার রাশেদুল ইসলাম হৃদয় ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার খায়রুল হাসান।
জানা যায়, পাঁচ বছর আগে সেতু এনজিওতে মাঠকর্মী হিসেবে যোগদান করেন হাসান। দুই বছর আগে সহকারী হিসাবরক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পান। ওই পদে জামালপুর সদরের পিয়ারপুর শাখায় কর্মরত ছিলেন। সেতু কর্তৃপক্ষের অভিযোগ ওই শাখার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক, ব্যবস্থাপক ও সহকারী হিসাব রক্ষক তিনজন সংস্থার প্রায় ৪৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় ওই তিনজনকে ক্লোজ করে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সেতুর প্রধান কার্যালয় টাঙ্গাইলের সেতু টাওয়ারে এনেন জিজ্ঞাসাবাদ করে কর্তৃপক্ষ। হাসান অভিযোগ অস্বীকার করেন। শেষে আঞ্চলিক ব্যবস্থাপককে ছেড়ে দিলেও ব্যবস্থাপক ও হিসাব রক্ষককে ৭ম তলার একটি কক্ষে আটকে রাখেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর হাসানের মা-বাবাকে ডেকে তাদের সামনেই হাসানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। হাসানের মা-বাবা সাতদিনের সময় নিয়ে বাড়িতে চলে যান। তখন থেকে দুজনকে সেতু টাওয়ারের ৭ম তলায় আটকে রাখা হয়।
গত শুক্রবার ভোর রাতে টাঙ্গাইল শহরে অবস্থিত সেতু টাওয়ারে পশ্চিম পাশ থেকে হাসানের মরদেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ সেতু কর্তৃপক্ষ তাকে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ ভবন থেকে নিচে ফেলে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালাচ্ছে। পরদিন শনিবার সন্ধ্যায় নিহতের মা সুফিয়া বেগম বাদি হয়ে গ্রেপ্তার পাঁচজনসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে টাঙ্গাইল সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
সেতুর উপ-পরিচালক (প্রশাসন) বিমল বাবু জানান, পিয়ারপুর শাখার ম্যানেজার ও সহকারী হিসাব রক্ষক দুইজন মিলে ৪৩ লাখ ৪৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় দুজনকে শহরের প্রধান শাখায় সংযুক্ত করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা অপরাধ স্বীকার করেন। অফিসের নিমাণাধীন সাত তলায় তাদের থাকার জন্য একটি রুম দেওয়া হয়। সেখান থেকে লাফ দিয়ে হাসান আত্মহত্যা করেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানভীর আহমেদ জানান, এ ঘটনায় নিহতের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করায় সেতু এনজিও'র পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।