বন্যায় রাউজানে ৫০ কি.মি. রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত
প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
গত মাসের শেষের (আগস্ট) দিকে টানা বৃষ্টি আর পাহাড়িঢলের পানির চাপে সৃষ্ট বন্যায় রাউজানে ৫০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিক হিসাবে এই ক্ষতির পরিমাণ ৬০ কোটি বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর।
স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খাল, নদীর বাঁধভাঙা স্রোতে বিভিন্ন ইউনিয়নের কোনো কাঁচা-পাকা রাস্তা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু রাস্তা এলাকার লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে চলাচল উপযোগী করার চেষ্টা শুরু করছে। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায় প্রায় এক মাস আগে সৃষ্ট বন্যায় সর্বাধিক রাস্তাঘাটের ক্ষতি হয়েছে হালদা পাড়ের ইউনিয়ন নোয়াপাড়া, পশ্চিম গুজরা, বিনাজুরী, পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড। অন্যদিকে পাহাড়ি এক স্রোতা সর্তা-ডাবুয়া খালের সঙ্গে থাকা রাউজান পৌরসভার ৪, ৬ নম্বর ওয়ার্ড ও ডাবুয়া, হলদিয়া, চিকদাইর ও নেয়াজিশপুর ইউনিয়ন সমূহে রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে।
স্থানীয়রা বলেছেন, সর্তা ও ডাবুয়া হয়ে তীব্র স্রোতে পানি নেমে এসে এসব এলাকার রাস্তাঘাটের ওপর দিয়ে গড়িয়েছে। যেদিকে স্রোতের তীব্রতা ছিল, সেদিকে ছিন্নভিন্ন করে গেছে। পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের বাসিন্দা লিয়াকত আলী বলেছেন মগদাই খালের দক্ষিণ পাশের পাকা রাস্তাটির ওপর দিয়ে নদীর পানির স্রোত বয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ধসে গেছে। এলাকাবাসী প্রথমদিকে ধসে যাওয়া রাস্তায় সাঁকোর ওপর ইট-বালু ফেলে কয়েকদিনের স্বেচ্ছাশ্রমে আপাত চলাচল উপযোগী করা হয়েছে।
নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মোকামীপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ হাবিবুলস্নাহ বলেছেন, কমলার দীঘি-কছুখাইন সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ধসে যাওয়া রাস্তা এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে আছে। এসব রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হালদা নদীর জোয়ারের পানির স্রোতে।
কছুখাইন দরবারের শাহজাদা মোহাম্মদ হাসান বলেন, ধসে গেছে স্থানীয় কছুখাইন-চৌধুরীহাট সড়কের বিভিন্ন স্থানে। উন্নয়নের আওতাধীন থাকা এই সড়কটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ফেলে রাখার কারণে বন্যার আগেও মানুষ কষ্টের মধ্যে ছিল। পরে বন্যার পানির স্রোত সড়ক পথে বিভিন্ন স্থানে ধস ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
পরিদর্শনকালে দেখা যায়- ধসের কারণে নারকীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে একই ইউনিয়নের মোকামী পাড়ার বাসিন্দারা। এখনকার কমলার দীঘি-কছুখাইন সড়কটির ছামিদর কোয়াং এলাকার ছাত্র যুবকরা বিধ্বস্ত সড়ক মেরামতের কাজ করছেন। স্বেচ্ছাশ্রমে কাজে নিয়োজিত হাবিবুলস্নাহ বলেন, সরকারের দিকে চেয়ে না থেকে জনদুর্ভোগ লাঘবে নিজেরা স্বেচ্ছাশ্রমে আপাত বিধ্বস্ত রাস্তা সংস্কারে নেমেছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর মাঠ পর্যায়ে ঘুরে ৫০ কিলোমিটার সড়ক পথ ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে আমরা পেয়েছি। বিধ্বস্ত সড়কের তালিকা ঊর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি ছাড়পত্র পেলে শিগগিরই সড়ক সংস্কার কাজে হাত দিতে পারব। ক্ষয়ক্ষতি আর্থিক হিসাবে ৬০ কোটি বলে তিনি জানান।