দ্বিতীয় দফায় ভেঙে গেল গোমতী নদীর অস্থায়ী সেতু : যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

সেতু নির্মাণের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

তিতাস (কুমিলস্না) প্রতিনিধি
কুমিলস্নার তিতাসে আসমানিয়া বাজার সংলগ্ন গোমতী নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন -যাযাদি
দ্বিতীয় দফায় ভেগে গেছে কুমিলস্নার তিতাসে আসমানিয়া বাজার সংলগ্ন গোমতী নদীর ওপর অস্থায়ী সেতু। এদিকে এই অস্থায়ী সেতু নির্মাণ ও বন্ধ থাকা নতুন সেতুর কাজ চালু করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। রোববার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত আসমানিয়া বাজার অংশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এতে আসমানিয়া বাজারের ব্যবসায়ী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশা শ্রেণির মানুষ অংশগ্রহণ করে। অস্থায়ী সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর দুইপাড়ের প্রায় ২০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দির রায়পুর বাস স্টেশন থেকে তিতাসের বাতাকান্দি বাজার পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ চলছে। ওই সড়কের আসমানিয়া বাজার সংলগ্ন গোমতী নদীর ওপর আগের সেতুর স্থানে ১০ কোটি ৭৭ লাখ ২৪ হজার ৬৯৯ টাকা ব্যয়ে ৭৫ মিটার নতুন সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। দুই পাড়ের মানুষের চলাচলের জন্য নির্মাণাধীন সেতুর পাশে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮০ মিটারের একটি অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়, যা এ বছরের ২৯ মে বালুবাহী বলগেটের ধাক্কায় ভেঙে যায়। পরে বলগেটের মালিকদের সহযোগিতায় আবার অস্থায়ী সেতুটি নির্মাণ করা হয়, যা এবারের বন্যার সময় স্রোতে গত ২১ আগস্ট দ্বিতীয়বারের মতো ভেঙে যায়। গোমতী নদীর পূর্বপাশে উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তর আসমানিয়া বাজার অবস্থিত। প্রতিদিন পশ্চিম পাড়ের প্রায় ১৩টি গ্রামের লোকজন ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে বাজারে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অপরদিকে পূর্ব পাড়ের প্রায় ৭টি গ্রামের লোকজন উপজেলা সদরের আসা-যাওয়ার জন্য সেতুটি ব্যবহার করে থাকে। এদিকে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন সেতু নির্মাণকাজ গত ১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। গত বছরের ৮ আগস্ট কাজ শুরু হয়েছে, যার মেয়াদ আছে ২০২৫ সালের ৭ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত। এসএবিএনএমই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়ন করছে। মানববন্ধনে নারান্দিয়া ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান ভিপি, স্থানীয় ব্যবসায়ী গোলাম মহিউদ্দিন জিলানী, জহিরুল ইসলাম, আব্দুল বাতেন, আদিলুর রহমান ভূঁইয়া বক্তব্যকালে অভিযোগ তুলে বলেন, আগের সেতুটি বহাল রেখে নতুন সেতু নির্মাণের কথা থাকলেও বিগত সরকারের আমলে অদৃশ্য কারণে পূর্বের সেতুর স্থানেই নতুন সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। জনগণের পারাপারের জন্য একটি অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হলেও সেতুটি বালুবাহী বলগেটের ধাক্কায় ভেঙে প্রায় দেড় মাস যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। পরে তা আবার নির্মাণ করা হলেও গত একমাস আগে বন্যার স্রোতে দ্বিতীয় দফা অস্থায়ী সেতুটি ভেঙে যায়। এখনো ওই সেতু নির্মাণের অগ্রগতি নেই। দ্রম্নত অস্থায়ী সেতু নির্মাণসহ নতুন সেতুর কাজ শুরু করতে তারা দাবি জানান। নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান খোকা জানান, এ এলাকার মানুষের প্রাণকেন্দ্র হলো আসমানিয়া বাজার। এটি উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তর বাজার। প্রতিদিন হাজার হাজার লোকজন এখানে আগমন ঘটে। প্রতিদিন ৩টি নৌকা দ্বারা মানুষ পারাপার হচ্ছে। অস্থায়ী সেতুটি দুই দফা ভেঙে যাওয়ায় বাজারের ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, ঠিকাদারকে কাজ চালুর একটি তাগাদাপত্র দিয়েছি। গত বুধবার তাদের একজন প্রতিনিধি অফিসে এসে জানিয়েছে আগামী সপ্তাহে কাজ শুরু করবে। বন্যার ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় অস্থায়ী সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। বিশেষজ্ঞ টিম এসে সরেজমিন পরিদর্শন শেষে প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করবে। এরপর বরাদ্দ পেলে যতদ্রম্নত সম্ভব অস্থায়ী সেতু নির্মাণকাজ শুরু হবে।